কুষ্টিয়ায় বহুজাতিক কোম্পানি ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর (বিএটি) মৌসুমি শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ চরমে পৌঁছেছে। ন্যায্য অধিকার ও সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতের দাবিতে ১২ দফা উপস্থাপন করে রোববার (১৫ জুন) সকালে আন্দোলনে নেমেছেন প্রায় ১,২০০ শ্রমিক। তারা কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে স্মারকলিপিও প্রদান করেছেন।
সকাল ৬টা থেকেই কুষ্টিয়া শহরের চৌড়হাস এলাকায় কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের পাশে বিএটির লিফ ফ্যাক্টরির মূল ফটকের সামনে জড়ো হন শ্রমিকরা। সেখানে প্রথম ধাপে বিক্ষোভ ও কর্মবিরতি চলতে থাকে দুপুর পর্যন্ত। এরপর তারা শহরের কালেক্টরেট চত্বরে গিয়ে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় শ্রমিকদের একটি প্রতিনিধি দল কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মো. তৌফিকুর রহমানের কাছে ১২ দফা দাবি সম্বলিত একটি স্মারকলিপি হস্তান্তর করে।
শ্রমিক সুপারভাইজার হিরু চাঁদ ও লাইজু আহমেদ জানান, “আমরা ডিসি স্যারের কাছে আমাদের দাবিগুলোর কথা তুলে ধরেছি। তিনি আমাদের আশ্বস্ত করেছেন যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে এবং সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা করা হবে। আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত আমরা ৩০ দিনের কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন করব।”
শ্রমিকদের দাবি ও অভিযোগের বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. তৌফিকুর রহমান বলেন, “এটি একটি প্রাইভেট অর্গানাইজেশনের বিষয়। সরকার কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ওপর জোর প্রয়োগ করতে পারে না। তবে শ্রমিকদের দাবি ও আন্দোলনের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। আইন অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটি তাদের দায়িত্ব পালন করছে কিনা, সেটি যাচাই করা হবে।”
আন্দোলনরত শ্রমিকদের একজন, সাব্বির হাসান শাওন বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছি। আমরা মৌসুমি শ্রমিক হিসেবে মেসার্স মতিয়ার রহমান নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিএটিতে কাজ করি। আমাদের মৌলিক ও ন্যায্য চাহিদাগুলো বারবার জানালেও তা উপেক্ষিত থেকে গেছে। তাই বাধ্য হয়েই আমরা কর্মবিরতিতে গেছি।”
শ্রমিকদের ১২ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে—বেতন বৈষম্য দূরীকরণ, কাজের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, মৌসুমি শ্রমিকদের স্থায়ী করার পরিকল্পনা, স্বাস্থ্যসেবা ও ইনসেনটিভ সুবিধা প্রদান ইত্যাদি।