কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার দূর্বাচারা গ্রামে সেনাবাহিনীর পরিচালিত এক সফল অভিযানে আটক হয়েছেন কুষ্টিয়া জেলার শীর্ষ সন্ত্রাসী ও চরমপন্থি নেতা জাহাঙ্গীর কবির লিপটন (৫৫)। শুক্রবার (৬ জুন) ভোরে চালানো এই অভিযানে লিপটনের তিন সহযোগীকেও গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযানের সময় বিপুল পরিমাণ দেশি ও বিদেশি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
সেনাবাহিনীর কুষ্টিয়া ক্যাম্পের একটি বিশেষ দল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে সদর উপজেলার উজানগ্রাম ইউনিয়নের দূর্বাচারা গ্রামে লিপটনের বাড়িতে অভিযান শুরু করে। টানা কয়েক ঘণ্টার অভিযানে তারা ভোর ৭টার দিকে চারজনকে গ্রেফতার করে। অভিযান শেষ হয় সকাল ৮টার দিকে।
কুমারখালী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবুল কালাম জানান, “আটক ব্যক্তিদের কাছ থেকে ৬টি বিদেশি পিস্তল, একটি শটগান, ম্যাগাজিন, গুলি এবং বেশ কিছু দেশি অস্ত্র জব্দ করা হয়েছে।”
গ্রেপ্তারের খবরে দূর্বাচারা বাজারে আনন্দ মিছিল বের করে এলাকাবাসী। সেনাবাহিনীকে অভিনন্দন জানিয়ে স্থানীয়রা বলেন, “এই এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে লিপটনের ত্রাস চলছিল। ব্যবসায়ীদের নিয়মিত চাঁদা দিতে হতো, কেউ প্রতিবাদ করলে হুমকি কিংবা হামলার শিকার হতে হতো।”
স্থানীয়রা আরও জানান, লিপটন ও তার সহযোগীদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল সাধারণ মানুষ। তার বিরুদ্ধে খুন, চাঁদাবাজি ও নানা ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের একাধিক মামলা রয়েছে।
জাহাঙ্গীর কবির লিপটন ‘গণমুক্তি ফৌজ’ নামক একটি নিষিদ্ধ চরমপন্থি সংগঠনের দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা ছিলেন। ২০১২ সালে পুলিশ সদর দফতর তার নামকে শীর্ষ চরমপন্থিদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে, লিপটনের বিরুদ্ধে হত্যা, চাঁদাবাজি ও অস্ত্র আইনে একাধিক মামলা এখনো চলমান।
লিপটন গ্রেপ্তারের পর সেনাবাহিনীর সামনেই ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে জনতা। দীর্ঘদিনের নির্যাতনের বিচার চান তারা। স্থানীয়রা বলছেন, এই গ্রেফতার যেন বিচারের আওতায় আসে এবং স্থায়ী শান্তি নিশ্চিত হয়। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে—আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
মোঃ সাজ্জাদ হোসেন