বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সেক্রেটারি আবু ইউসুফ বলেছেন, এই দেশের মানুষ বিপ্লব পরবর্তী এমন একটি সমাজ দেখতে চায় যে সমাজে কোনো জুলুম থাকবে না, কোনো নির্যাতন থাকবে না, কোনো চাঁদাবাজ থাকবে না, কোনো টেম্পুস্ট্যান্ড থাকবে না। সামনে তৈরি হবে একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ।
রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) অমর একুশে ফেব্রুয়ারি এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০২৫ উপলক্ষ্যে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখার আয়োজনে ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনের নেতৃবৃন্দের নিয়ে ‘৫২ থেকে ২৪ : ইতিহাসের পরিক্রমা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এমন মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি আরোও বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি- আমাদের বিপ্লবী সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করার পর ছয় মাস অতিবাহিত হলেও ফ্যাসিস্ট ও তার দোসরদের কোনো বিচার হচ্ছে না। আমরা হুঁশিয়ার করে বলে দিতে চাই ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যদি ফ্যাসিস্টকে নির্মূল না করা হয় তাহলে ছাত্রসমাজ কিন্তু আর বসে থাকবে না।
বায়ান্ন থেকে চব্বিশ পর্যন্ত ইতিহাস পর্যালোচনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, পশ্চিম পাকিস্তান উর্দু ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করেছিল। তারা বাংলা ভাষাকে সম্মান জানায়নি। যার কারণে ১৯৪৭ সালেই তমদ্দুন মজলিশ নামে একটি সংগঠন গঠিত হয় যার অধীনে ভাষা আন্দোলনের সূচনা হয়। ১৯৫২ সালে যখন আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে যায় তখন পাকিস্তান সরকার ১৪৪ ধারা জারি করে। কিন্তু বাঙালি জাতি তা ভঙ্গ করে মাঠে ময়দানে নেমে যায়। তখন পাকিস্তানি বাহিনী বাঙালিকে মানুষ মনে না করে নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করে। এই আন্দোলনের ফলস্বরূপ আমরা বাংলাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে দেখতে পেয়েছি।
পরবর্তীতে ১৯৭০ এর নির্বাচনে শেখ মুজিবের ওপর অবিচারের প্রতিবাদে বাঙালি আবার রাস্তায় নামে। দীর্ঘ নয়মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করি। এটা কিন্তু নির্দিষ্ট কোনো দলের নয় বরং আপামর জনতার একটি আন্দোলন।
এরপর ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির প্রতিষ্ঠিত হয়। তারপর দেশের সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে আপামর জনসাধারণ অংশগ্রহণ করে। সেই আপামর জনসাধারণের মধ্যে ইসলামী ছাত্রশিবিরেরও স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল।
এরপর ২০০৯ সালে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে তারা দেশের মানুষের উপর যে নির্যাতন শুরু করেছিল তা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছিল ২০২৪ সালে। পূর্বের মতো একইভাবে ২০২৪ সালেও আপামর জনসাধারণসহ সর্বস্তরের সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণের ফলে একটি সফল বিপ্লব সংঘটিত হয়েছিল। এই বিপ্লব কোনো দল বা ব্যক্তির ক্রেডিট নয় বরং এর ক্রেডিট সকলের।
উল্লেখ্য, এ আলোচনা সভায় আরোও উপস্থিত ছিলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখার সমন্বয়ক এস এম সুইট, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ ইবি শাখার সেক্রেটারি ইসমাইল হোসেন রাহাত, খেলাফত ছাত্র মজলিসের ইবি প্রতিনিধি সাদেক আহম্মেদসহ ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।