প্রথমে কোমল পানীয়ের সাথে ঘুমের ওষুধ খাওয়ানো হয় তারপর অচেতন অবস্থায় শ্বাসরোধ করে নিজের স্ত্রী ছাবিনা খাতুনকে হিত্যার করেন তাঁর স্বামী শিপন শেখ। অভাব-অনটন আর পারিবারিক কলহের কারণে স্ত্রী ছাবিনা খাতুনকে হত্যা করেন বলে তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন। লাশ গুম করতে বাড়ির পাশে ডোবায় ফেলে দেন আসামি শিপন।
হত্যাকাণ্ডের পর এ দায় থেকে বাঁচতে প্রতিবেশিদের কাছে তিনিই গল্প সাজান ‘গরু বিক্রির টাকা নিয়ে তার স্ত্রী ছাবিনা পালিয়ে গেছে’। তবে পুলিশের হাতে ঠিকই ধরা পড়ে গেছেন। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করলেন তার স্ত্রী ছাবিনাকে হত্যার কথা।
বুধবার(৬ জুলাই) দুপুরে পাবনার বেড়া উপজেলার আমিনপুর থানায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে গৃহবধূ ছাবিনা খাতুন হত্যার রহস্য উদঘাটনের পর এসব তথ্য জানান সহকারী পুলিশ সুপার (সুজানগর সার্কেল) রবিউল ইসলাম। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আমিনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রওশন আলী।
রবিউল ইসলাম বলেন, ১২ বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। পারিবারিক কলহের কারণে গত দুই মাস আগেই তিনি খুনের পরিকল্পনা করেন। খুন করার আগেরদিন বাড়ির একটা গরু বিক্রি করেন। গৃহবধূ ছাবিনা এনার্জি ড্রিংকস খেতে পছন্দ করে জেনে শিপন এনার্জি ড্রিংকস কিনে আনেন। রাতে তাদের তিন সন্তান পাশের রুমে ঘুমিয়ে পড়লে, প্রথমে এনার্জি ড্রিংকসের সাথে ঘুমের ঔষধ মিশিয়ে কৌশলে ছাবিনাকে তা খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে দেন শিপন।
তারপর গরুর দড়ি দিয়ে হাত-পা বেঁধে গামছা দিয়ে গলা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। লাশ গুম করার জন্য প্রথমে বাড়ির পাশের ডোবার পানিতে ফেলে দেন। কিন্তু যখন দেখেন যে লাশ ভেসে উঠছে, তখন তিনি বাড়ি ফিরে গিয়ে একটা চাকু নিয়ে এসে গৃহবধূর পেট কেটে দেন এই ভেবে যে লাশ আর ভেসে উঠবে না এবং তিনি আর ধরা পড়বেন না।
পরবর্তীতে আটক শিপনকে আবারো ঘটনাস্থলে নিয়ে তার দেখানো মতে, স্থানীয় সাক্ষীদের সামনে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত এনার্জি ড্রিংকসের বোতল, দড়ি, গামছ ও চাকু উদ্ধার করা হয়।
গতকাল মঙ্গলবার(৫ জুলাই) সকালে আমিনপুর থানার পাইকান্দি গ্রামের একটি ডোবা থেকে গৃহবধূ ছাবিনা খাতুনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহত গৃহবধূ ছাবিনার ভাই রুবেল মোল্লা বাদি হয়ে শিপনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন।
বুধবার বিকেলে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে শিপন শেখকে আদালতে হাজির করা হলে তিনি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।