26 C
Dhaka
Thursday, December 19, 2024

ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি ও আর্থিক সংকটে জনজীবন বিপর্যস্ত: ফখরুল

- Advertisement -

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকারের লাগামহীন দুর্নীতি, অপরিণামদর্শী ভ্রান্তনীতি ও চরম অব্যবস্থাপনার মাশুল দিচ্ছে জনগণ। যে কারণে বিদ্যুৎ-জ্বালানি-পরিবহণ-খাদ্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় বাজারের ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতিতে জনগণের ত্রাহি অবস্থা, জনজীবন বিপর্যস্ত।

মঙ্গলবার(২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের  কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা জানান। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ ও ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স।

মির্জা ফখরুল বলেন, সামষ্টিক অর্থনীতির প্রায় সব সূচকই আরও দুর্বল ও প্রকট হয়ে উঠেছে। বর্তমান বাংলাদেশে চারিদিকে শুধু হাহাকার, নাই আর নাই। সমগ্র দেশটিই যেন এক ‘নাই’-এর রাজ্যে পরিণত হয়েছে।নিত্যপণ্যের উচ্চমূল্যের জাঁতাকলে মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। এ কথায় দেশের অর্থনীতি এক মহাসংকটে নিমজ্জিত।

তিনি বলেন, গত আগস্টে সরকারি হিসেবেই মূল্যস্ফীতি দেখানো হয় ৯ দশমিক ৫২ শতাংশ। বর্তমান মূল্যস্ফীতি কমছে দেখানো হলেও খাদ্যবর্হিভূত মূল্যস্ফীতি এখনো প্রায় দুই অঙ্কের কাছাকাছি রয়েছে। জানুয়ারি মাসে এই হার ছিল ৯ দশমিক ৮ শতাংশ। বাজারে জিনিসপত্রের দাম বেড়েই চলেছে। চাল-ডাল-ডিমের দাম আকাশছোঁয়া। এমনকি ব্রয়লার মুরগির দাম ২০০ টাকার ওপরে। অথচ সরকারের পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) সাধারণ মূল্যস্ফীতি দেখাচ্ছে ৮ মধমকি ৫৭ শতাংশ আর খাদ্য মূলস্ফীতি ৭ দশমিক ৭৬ শতাংশ। যার সঠিকতা নিয়ে খোদ অর্থনীতিবিদরাই শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংকটের জন্য ইউক্রেন যুদ্ধ ও বৈশ্বিক রাজনীতিকে দায়ী করে থাকে; যা সত্য নয়। ইউক্রেন যুদ্ধ নয়, বরং অর্থনৈতিক সংকটের মূল কারণ সরকারের সর্বগ্রাসী দুর্নীতি এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা। কে না জানে যে করোনার প্রাদুর্ভাব এবং ইউক্রেন যুদ্ধের অনেক আগ থেকেই বাংলাদেশের অর্থনীতি ঝুলে গিয়েছিল। দুর্নীতি, বাজার সিন্ডিকেট ও অব্যবস্থাপনার ফলে দ্রব্যমূল্যের জাঁতাকলে মানুষ ছিল পিষ্ট। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের জুলাই পর্যন্ত বাজার থেকে ডলার কেনার ধারায় ছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক; কিন্তু এরপর থেকে ব্যাংকগুলোর কাছে ধারাবাহিকভাবে ডলার বিক্রি করা শুরু হয়।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ২০২১ সালের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রতি মাসে গড়ে ৩১ কোটি ডলার বিক্রি করা হলেও পরে তা ক্রমান্বয়ে বেড়েছে। এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত প্রতি মাসে গড়ে ১ বিলিয়ন ডলার বাজারে বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপর থেকে প্রতি মাসে বিক্রি করতে হচ্ছে দেড় বিলিয়ন ডলার। এখন অর্থনীতির সব দুর্বল দিক একসঙ্গে দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে।

তিনি বলেন, তথাকথিত উন্নয়নের ফাঁকা বেলুন এখন ফুটে গেছে। তারা নজিরবিহীন দুর্নীতি, গুম-খুন-হত্যা আর নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির দায় এবার যতই কুটকৌশল করুক না কেন, একদিন জনগণের কাছে তাদের জবাবদিহি করতেই হবে।

মধ্যবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ আজ দুবেলা খেতে পারছে না উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, অথচ আওয়ামী লীগ একদিকে শত শত কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে দিচ্ছে অন্যদিকে টাকা ছাপিয়ে দেশ চালানো হচ্ছে। গত দুই মাসে ৫০ হাজার কোটি টাকা ছাপানো হয়েছে। তারা ব্যাংক থেকে টাকা ধার নিয়ে চালাচ্ছে। এটা অব্যাহতভাবে চলতে পারে না। দুর্নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে এ দেশের কোষাগার শূন্যের কোটায় নিয়ে গেছে। একদিকে মেগা প্রজেক্টের নামে লুটপাট করে টাকা বিদেশে পাচার করেছে, অন্যদিকে ব্যাংকগুলো খালি করে দিয়েছে। ডলারের অভাবে এলসি খোলা যাচ্ছে না। লুটপাটের কারণে প্রতিনিয়ত দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্য বারবার বৃদ্ধি, দেশের রিজার্ভ তলানি নেমে আসা, নজিরবিহীন ডলার সংকট, ডলারের বিনিময়ে টাকার অভূতপূর্ব অবমূল্যায়ন, ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতে অব্যবস্থাপনা চলছে। এছাড়া অপরিণামদর্শী ভ্রান্তনীতি, লাগামহীন দুর্নীতি, বিদেশে অর্থ পাচার, ঋণখেলাপি বৃদ্ধি পাওয়া, ঋণপ্রাপ্তির অপর্যাপ্ততা, অর্থনৈতিক আয় বৈষম্য, সুশাসনের অভাব এবং গণতন্ত্র না থাকার কারণে দেশে অর্থনৈতিক নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের অর্থনৈতিক সংকটের কথা সরকার স্বীকার করছে না।
এ সরকারের না দেখার প্রধান কারণ হচ্ছে তাদের কোনো জবাবদিহিতা নেই। তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়, তারা নির্বাচিত হয়ে আসেনি। যদি নির্বাচিত হয়ে আসতো তাহলে তাকে পার্লামেন্টে জবাবদিহি করতে হতো। জনগণের সামনে জবাবদিহি করতে হতো। সব সময় একটা মিথ্যা প্রচারণা করে, ভয়-ভীতি-ত্রাস সৃষ্টি করে, গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করে সরকার সার্বক্ষণিকভাবে একটি মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে গোয়েবলসের মতো। তারা মিথ্যা ধারণার মধ্যে জনগণকে রাখতে চায়। 

মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার সরে না গেলে সংকট যাবে না। এ সরকারকে সরে যেতে হবে। তারপর যোগ্য ব্যক্তি যারা কাজ করতে পারেন তাদের নিয়ে এসে সমস্যা সমাধান অত্যন্ত দ্রুত করা সম্ভব হবে। সরকার সরে যাওয়া ছাড়া এটা সম্ভব হবে না। এ সরকারকে রেখে এটা করা যাবে না।

বর্তমান সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে দেশের অবস্থা আজ এমন শোচনীয় অবস্থায় যেত না অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, অনেকে মনে করেন, আইএমএফের ঋণে সংকট কাটবে না। এ ঋণ বরং আলিগার্কদের (ক্ষমতাবানদের) পেটে যাবে, কষ্ট বাড়বে সাধারণ জনগণের। ব্যাংকি ও রাজস্ব খাতের সংস্কার এবং নীতি সংস্কার করে খেলাপি ঋণ পুনরুদ্ধার না করলে, শক্তভাবে দুর্নীতি ও অর্থ পাচার রোধে ব্যর্থ হলে যে সূত্র হতেই ঋণের টাকা আসুক নানা কৌশলে শেষ পর্যন্ত আলিগার্করাই (ক্ষমতাবানরাই) লুণ্ঠন করে দেবে।

সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতার জন্য আর্থিক খাতে সংস্কার, সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার উন্নতি, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালীকরণ, কর শুল্ক, আর্থিক খাত, ব্যাংকিং সেক্টার, বাজেট ব্যবস্থাপনা, বাণিজ্য নীতির সংস্কার করা আবশ্যক বলে মনে করেন বিএনপি মহাসচিব।

তিনি বলেন, এখন প্রয়োজন দুর্নীতিমুক্ত আইনের শাসন এবং প্রকৃত অর্থেই জনগণের ভোটে নির্বাচিত একটি গণতান্ত্রিক সরকার। বিএনপি আশা করে বাংলাদেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও আর্থিক খাতে কার্যকর সংস্কার সাধনে একটি প্রকৃত গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য আইএমএফ বিশেষ সহযোগিতার হাত বাড়াবে।

আমরা সরকার পরিবর্তনে ১০ দফা দাবি আদায়ে আন্দোলন করছি জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জনগণ নির্বিঘ্নে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে দেশনায়ক তারেক রহমানের ঘোষিত রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ২৭ দফা বাস্তবায়নে কাঙ্ক্ষিত জাতীয় সরকার গঠন করবে।

- Advertisement -
ফেস দ্যা পিপল লাইভ টক শো উইথ সাইফুর সাগর
Video thumbnail
মানুষের আস্থার নির্বাচন দেয়ার পরিবেশ এখনও তৈরী হয়নি: সাবেক শিবির সভাপতি সালাহউদ্দিন আইয়ুবী
06:23
Video thumbnail
এবার বিশ্ব ইজতেমা হলে আওয়ামী লীগ যা করতে পারে, জানালেন ছাত্রনেতা মো. রাকিব
10:50
Video thumbnail
৪০০ কোটি নয়, শেখ হাসিনার সেই পিয়নের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হয় ৬২৬ কোটি টাকা!
02:49
Video thumbnail
তাবলীগের সাথীদের হ'ত্যার করার আগের দিন কী ঘটেছিল, তাদের পরিচয় নিয়ে যা বললেন ড. ফয়জুল হক
08:22
Video thumbnail
ইজতেমার মাঠে দুই তিনশো লোককে হ'ত্যা করার পরিকল্পনা তাদের ছিল: সাবেক শিবির সভাপতি
11:26
Video thumbnail
ইজতেমা ময়দানের হা'ম'লার ঘটনায় র এর সংশ্লিষ্টতার অভি'যো'গ বিন ইয়ামিন মোল্লার
08:18
Video thumbnail
বিএসএফ এবার হ'ত্যা করে নদীতে ফে'লে দিলো করলো ৩ বাংলাদেশিকে
01:15
Video thumbnail
শেষ পর্যন্ত ইজতেমা ময়দান দ'খলে রাখতে পারলো না সাদপন্থীরা
03:23
Video thumbnail
যশোরের এক মাদরাসার ভিডিও ভা’ই’রাল, ফেস দ্যা পিপলের অনুসন্ধানে যা জানা গেল
04:00
Video thumbnail
তাবলীগ জামাতের পেছনে কোন শক্তি? আগে বিচার নাকি নির্বাচন? যা করা উচিত।
01:12:20

সর্বশেষ

আমাদের সাথে সংযুক্ত হোন

1,600,000FansLike
428FollowersFollow
1,270,000SubscribersSubscribe