বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ রেখে শিক্ষার্থীদের মাঝে ইউনিলিভার কোম্পানির অভিনব বিজ্ঞাপন প্রচারের অভিযোগ উঠেছে। শরীয়তপুরের একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটেছে।
শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলার সরকারি ডামুড্যা মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ের সোমবার সকালে অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নিয়ে দুই ঘণ্টাব্যাপী ইউনিলিভারের অনুষ্ঠান করা হয়েছে।
সূত্রে জানা যায়, বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল মজিদের অনুমতি নিয়ে ইউনিলিভার কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিরা চার তলা ভবনের তৃতীয় তলায় প্রায় ১০০ ছাত্রীর মাঝে তাদের কোম্পানির ফেসওয়াশ, ক্রিম ও সাবানের চটকদার বিজ্ঞাপন প্রচার করছেন। প্রতিনিধিরা কোম্পানির ব্যানার, ফেস্টুন ও প্রয়োজনীয় উপাদান টেবিলে সাজিয়ে এসবের গুণাগুণ আলোচনা করছেন।
তবে গণমাধ্যমকর্মীদের দেখে প্রচারণা বন্ধ করে দেন তারা। গণমাধ্যমকর্মীরা এ সময় ইউনিলিভার কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিদের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তারা বলেন, এ ধরনের অনুষ্ঠান আমরা প্রায়ই করি। তবে এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক আমাদের অনুমতি দিয়েছেন।
ওই অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া একাধিক শিক্ষার্থী বলে, সকাল ১০টা থেকে পাঠদান শুরু হলেও আমাদের প্রধান শিক্ষক আমাদেরকে বলেন তোমরা নতুন ভবনের তিন তলার রুমে চলে যাও। স্যারের কথায় রুমে গিয়ে দেখি ইউনিলিভার কোম্পানির পন্ডস ফেসওয়াশ ও ক্রিমের বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। পাঠদান বন্ধ রেখে আমাদরকে বাধ্যতামূলক ওই বিজ্ঞাপন দেখানো হয়েছে। আমরা স্কুলে এসেছি পড়াশোনা করতে, বিজ্ঞাপন দেখতে আসিনি।
দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করে গণমাধ্যমকে বলেন, অন্যান্য দিনের মতো স্কুলে এসেছিলাম ক্লাস করতে। কিন্তু স্কুলের ক্লাস থামিয়ে প্রধান শিক্ষক হঠাৎ করে বললেন তৃতীয় তলায় যেতে। ওখানে গিয়ে দেখি, প্রসাধনী সামগ্রীর বিজ্ঞাপন দেখানো হচ্ছে। পাঠদান বন্ধ করে কেন প্রধান শিক্ষক আমাদেরকে ওই বিজ্ঞাপন দেখিয়েছেন তা আমরা বুঝতে পারছি না।
এ বিষয়ে ওই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল মজিদ গণমাধ্যমকে বলেন, আশপাশের অন্যান্য স্কুলগুলোতে ইউনিলিভার কোম্পানি মেয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রসাধনী পণ্যের প্রচারণা করেছে। বিষয়টি আমার কাছে শিক্ষণীয় মনে হওয়াতে কোম্পানির প্রতিনিধিদের অনুমতি দিয়েছি। তারা এসে স্কুলের নবম, দশম শ্রেণির মেয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রসাধনী পণ্যের প্রচারণা করেছে।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নুরুজ্জামান খান বলেন, কোনো বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ রেখে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পণ্যের বিজ্ঞাপন দেখানো আইন পরিপন্থী। এ ধরনের কাজ যদি কোনো বিদ্যালয়ে হয়ে থাকে তাহলে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সকলের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।