ববি প্রতিনিধি: বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি) ও বিএম কলেজের উভয় পক্ষের পাল্টাপাল্টি সংঘর্ষে ক্ষতিগ্রস্ত বাস মেরামতের টাকা পরিশোধ না করায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) দুটি বাস আটকে রেখেছে সরকারি বিএম কলেজের শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে ক্ষতিপূরণের অভাবে ববির আগুনমুখা বাসটি দীর্ঘদিন ধরেই ভাঙাচোরা অবস্থায় পড়ে আছে।
বৃহস্পতিবার সকালে আন্ধারমানিক ও নয়নভাঙ্গানী নামের বাস দুটিকে আটকে কলেজের মহাত্মা অশ্বিনী কুমার ছাত্রাবাস প্রাঙ্গণে রাখে শিক্ষার্থীরা।
তবে দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে আটক বাসগুলো মুক্ত করতে চেষ্টা করছে দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ, শিক্ষার্থী এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এছাড়া বাস আটকের ঘটনাকে কেন্দ্র করে যেন কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয় সেদিকে নজর রাখছে পুলিশ।
এর আগে গত গত ৩ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ও বিএম কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয় এতে বিএম কলেজের শিক্ষার্থীরা ববির আগুনমুখা বাসটি ভাঙচুর করলে পাল্টা জবাবে বিএম কলেজের চারটি বাস ভাঙচুর করে ববি শিক্ষার্থীরা।
বিএম কলেজের শিক্ষার্থীরা জানান, সংঘর্ষের ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ প্রশাসনের সমঝোতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এ সময় যার যা ক্ষতি হয়েছে তা জরিমানা দেওয়ার কথা থাকলেও বিএম কলেজের যা ক্ষতি হয়েছে এখনও তা দেয়নি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়।
ফলে বিএম কলেজের চারটি বাস পড়ে আছে ভাঙাচোরা অবস্থায়। ফলে চারটি রুটে বাস চলাচল না করায় শিক্ষার্থীরা নানা ভোগান্তিতে দিন কাটাচ্ছেন। এ সমস্যা থেকে সমাধানের জন্য একাধিকবার বিভিন্ন মিটিং হলেও জরিমানার বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ফলে বাধ্য হয়ে বাস দুটি আটকে রেখেছেন তারা।
এদিকে ক্ষতিপূরণের অভাবে ববির আগুনমুখা বাসটি দীর্ঘদিন পড়ে আছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সোনালী ব্যাংক সংলগ্ন রাস্তায়৷ বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা৷
বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, গতকাল ক্ষতিগ্রস্ত বাসের ব্যাপারে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে মিটিং সম্পন্ন হয়েছে৷ সেখানে সুষ্ঠু সমাধান করা হয়েছে বিষয়টি নিয়ে৷ তাহলে আজ কেন তারা আমাদের বাস আটকিয়েছে৷ কর্তৃপক্ষের কাছে সুষ্ঠু বিচার চাই৷ তাছাড়া এর আগে বিএম কলেজের শিক্ষার্থীরা আমাদের বাস ভেঙেছে।
সরকারি বিএম কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. তাজুল ইসলাম জানান, সকাল ৯টার দিকে খবর আসে যে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি বাস শিক্ষার্থীরা আটকে রেখেছেন। মূলত যে বাসগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ভেঙে ছিল সেগুলো মেরামতের ব্যবস্থা না করায় ক্ষোভে এমনটা করেছেন। তবে শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।
গত ৩ সেপ্টেম্বর দুই পক্ষের সংঘর্ষে বরিশাল বিএম কলেজের পাঁচ লাখের বেশি ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক লাখ ৮০ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলেও জানান কলেজ অধ্যক্ষ।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রাহাত হোসেন ফয়সাল জানান, ভুল বোঝাবুঝির কারণে এমনটা হয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে বিষয়টি নিয়ে উচ্চ পর্যায়ে কথা বলেছে। দ্রুত বিষয়টি সমাধান করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
বরিশাল মেট্রোপলিটনের সহকারী পুলিশ কমিশনার শওকত আনোয়ার ইসলাম জানান, বিষয়টি মীমাংসার জন্য দুই প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা হয়েছে। যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সজাগ আছে।