সোশ্যাল মিডিয়ায় গতকাল সন্ধ্যার পর থেকেই একটি খবর ছড়িয়ে পড়ে-দেড় শতাধিক বিক্ষোভকারী খুলনা প্রেসক্লাবে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। এর পরই দেশজুড়ে এক মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তবে তেমন কোনো ঘটনা ঘটেনি বলেই নিশ্চিত করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব নিজেই।
শনিবার রাতে ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে শফিকুল আলম খুলনা প্রেসক্লাবের ওই ঘটনা বিস্তারিত তুলে ধরেছেন।
তিনি লিখেছেন, ‘দিনব্যাপী সফরে আজ আমরা খুলনায় এসেছিলাম। আমার সঙ্গে প্রেস উইংয়ের দুজন সহকর্মীও ছিলেন। খুলনা ডিসি অফিসে আমাদের একটি সংবাদ সম্মেলন ছিল। সেখানে সংবাদ সম্মেলন শেষ করে আমরা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করি। সেখান থেকে আমরা খুলনা প্রেসক্লাবে যাই। তখন একজন কর্মকর্তা আমাদের খুলনা প্রেসক্লাবের কিছু কক্ষ দেখাচ্ছিলেন, যেগুলো স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।’
প্রেস সচিব লিখেছেন, ‘ওই সময় প্রায় ২০০ জন বিক্ষোভকারী একটি প্রতিবাদী মিছিল নিয়ে প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে আসেন। তারা খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের পদত্যাগ দাবিতে স্লোগান দিচ্ছিলেন। সাংবাদিকরা জানালেন, তারা তিন দিন ধরে একই দাবিতে বিক্ষোভ করছেন।’
শফিকুল আলম লেখেন, ‘বিক্ষোভকারীরা তাদের প্রতিবাদের বিষয়টি জানাতে আমার কাছে এসেছিলেন। খুলনা প্রেসক্লাবের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভা শেষ করে আমি ক্লাবের নিচে নেমে আসি বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলতে। আমরা ধৈর্য সহকারে তাদের অভিযোগ শুনেছি এবং তাদেরকে আশ্বাস দিয়েছি যে, তাদের বার্তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দেব।’
খুলনা প্রেসক্লাবের ঘটনা নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন বিক্ষোভকারীরা। সবশেষে প্রেস সচিব লিখেছেন, ‘আমরা সেখানে (খুলনা প্রেসক্লাব) চা-বিস্কুট খেয়েছি। এর প্রায় ৩০ মিনিট পর খুলনা প্রেসক্লাব থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছি।’
এদিকে আন্দোলনকারীরাও সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবের কাছে তারা গিয়েছিলেন তাদের দাবিদাওয়া জানাতে, তাকে অবরুদ্ধ করতে নয়।
শনিবার (২৮ জুন) রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়ক ও খুলনা জেলা শাখার সদস্যসচিব সাজিদুল ইসলাম বাপ্পি এ কথা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমকে আমরা অবরুদ্ধ করিনি।’
সাজিদুল ইসলাম বাপ্পি বলেন, ‘তিনি (প্রেস সচিব) আমাদের খুলনার অতিথি। আমরা খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার (কেএমপি) জুলফিকার আলী হায়দারের পদত্যাগের দাবির বিষয়টি তাকে জানাতে গিয়েছিলাম। গত চার দিন যে আন্দোলন করছি, খুলনার আইনশৃঙ্খলার যে অবনতি হয়েছে— এসব বিষয় আমরা প্রেস সচিবকে জানাতে গিয়েছি। আমরা চেয়েছি খুলনার পরিস্থিতি তিনি প্রধান উপদেষ্টাকে জানান।’
এই ছাত্র নেতা আরও বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম আমাদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অবগত করবেন বলে জানিয়েছেন। আমরা ২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণ করব।’