বিএনপি গণতান্ত্রিক আদর্শ ও মূল্যবোধের প্রধান অন্তরায় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি সর্বদাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে আসছে। দলটি এদেশে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং গণতান্ত্রিক আদর্শ ও মূল্যবোধের প্রধান অন্তরায়।’
বিএনপি কখনোই তাদের হাতে লেগে থাকা রক্তের দাগ মুছতে পারেনি উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘তারা রক্তের নেশা থেকে মুক্ত হতে পারেনি। হত্যা-ক্যু-ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে অবৈধ ও অসাংবিধানিক পন্থায় ক্ষমতা দখল করে ইতিহাসের নিষ্ঠুর স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান বিএনপি প্রতিষ্ঠা করে; রক্তের স্রোত প্রবাহিত করে দেশের গণতান্ত্রিক ধারাকে চিরতরে মুছে ফেলার অপচেষ্টা চালায়। স্বৈরশাসনের গর্ভে যে রাজনৈতিক দলের উত্থান ও পথচলা তারা কখনই গণতন্ত্রকে ধারণ ও লালন করে না।’
কাদের বলেন, ‘১৫ই আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা, ৩ নভেম্বর জেলখানার অভ্যন্তরে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা এবং ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট তৎকালীন বিরোধীদল আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করতে যারা বর্বরোচিত নৃশংস গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিল তাদের মুখে গণতন্ত্রের কথা শোভা পায় না। বিএনপি তাদের ২০০১-০৬ শাসনামলে শাহ এম এস কিবরিয়া, আহসান উল্লা মাস্টার, মমতাজ উদ্দিনসহ ২৪ হাজার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে হত্যা এবং লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মীর ওপর অকথ্য অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়ে রক্তের হলিখেলায় মেতে উঠেছিল। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ এবং নির্বাচন বানচালের নামে ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে পেট্রোল বোমা মেরে শত শত নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছে বিএনপি। স্বভাবগত কারণেই বিএনপি আন্তর্জাতিকভাবে (কানাডার ফেডারেল আদালত কর্তৃক ঘোষিত রায়ে) স্বীকৃত একটি সন্ত্রাসী সংগঠন।’
সরকারবিরোধী আন্দোলনে জনগণের সাড়া না পেয়ে মির্জা ফখরুলসহ বিএনপি নেতারা পাগলের প্রলাপ বকছে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সরকারবিরোধী আন্দোলনে জনগণের সাড়া না পেয়ে ফখরুলসহ বিএনপি নেতৃবৃন্দ পাগলের প্রলাপ বকছে। গতকাল যশোরের জনসভায় গণমানুষের ঢল আবারও প্রমাণ করেছে দেশবাসী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সরকারের প্রতি আস্থাশীল।’
‘অথচ বিএনপি নেতৃবৃন্দ বানোয়াট তথ্য উপস্থাপন ও গুজব ছড়িয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির মাধ্যমে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে লাগাতারভাবে তাদের চিরাচরিত মিথ্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে। যে কোনো উপায়ে ক্ষমতা দখলে মরিয়া বিএনপি নেতৃবৃন্দ নীতি বিবর্জিত রাজনীতি ও সন্ত্রাসী পন্থা বেছে নিয়েছে। একদিকে তারা দেশের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হচ্ছে। অন্যদিকে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে জনমনে ভীতি সঞ্চার এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির পাঁয়তারা চালাচ্ছে।’-বলেন কাদের।
বিবৃতিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থানে নির্বিঘ্নে সভা-সমাবেশ করছে। আবার সরকার কর্তৃক তাতে বাধা দেওয়ার মিথ্যা অভিযোগ তুলে তাদের বিদেশি প্রভুদের কাছে রাজনৈতিক অনুকম্পা প্রার্থনা করছে। বাংলাদেশে মুক্ত গণতান্ত্রিক পরিবেশ আছে বলেই বিএনপি নেতৃবৃন্দ প্রতিদিন সমাবেশের নামে সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করতে পারছে; গণমাধ্যম এবং বাকস্বাধীনতা আছে বলেই মিডিয়াবাজির রাজনীতি চালিয়ে যেতে পারছে।’
বিবৃতিতে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার উন্নয়ন-অগ্রগতির ধারায় একের পর এক সাফল্যের স্মারক রেখে চলেছে। যার ফলে জনগণের জীবনমানের উন্নতি ঘটছে। ঠিক সেই সময় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকারের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার মিথ্যা অভিযোগ তুলে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। জননেত্রী শেখ হাসিনা কখনো ক্ষমতার মোহে রাজনীতি করেননি। জনকল্যাণের মহান ব্রত নিয়েই তিনি রাজনীতি করে আসছেন। আওয়ামী লীগ কখনোই জনগণের শাসক নয় বরং সেবক। তাই বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা মনে প্রাণে বিশ্বাস করেন, জনগণই আওয়ামী লীগের শক্তি— জনগণই ক্ষমতার প্রধানতম উৎস।’