বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশগুলো নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য আন্তর্জাতিক মানের বিশ্বাসযোগ্য, অংশিদারিত্বমূলক নির্বাচন দেখতে চায়। এর সাথে নিরপেক্ষ-তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির কোনো ব্যবধান নেই।
সোমবার (৯ অক্টোবর) মার্কিন প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন হলে তারা (বিদেশিরা) যা চাচ্ছে, তা হবে না উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য আন্তর্জাতিক মানের বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন এই সরকারের অধীনে হবে না বলেই তারা কথাগুলো বলে যাচ্ছে। সার্বক্ষণিক নজরে রাখছে, অ্যাকশন নিচ্ছে।
বাংলাদেশে সংসদ নির্বাচনের জন্য তাদের পূর্ণাঙ্গ পর্যবেক্ষক দল পাঠাবে না ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এ প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকেও একই উদ্দেশ্যে প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক প্রতিনিধিদল এসেছে। তারা নির্বাচনের পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করছে, আগামী দিনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে কিনা।
আমীর খসরু বলেন, সকলের মনে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যে প্রশ্ন জেগেছে, তারা (মার্কিন প্রতিনিধিদল) সেই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে এসেছে। তারা অনেকের সাথে কথা বলেছে, আমাদের সাথেও কথা হচ্ছে, আরও অনেকের সঙ্গে কথা বলবে। তবে কথা একটাই ঘুরেফিরে, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য আন্তর্জাতিক মানের বিশ্বাসযোগ্য, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হতে হবে।
তিনি বলেন, এটা হতে হলে কী প্রয়োজন, সেটা কীভাবে করা যায়…। আমরা দীর্ঘদিন ধরেই বিএনপির পক্ষ থেকে বলে এসেছি, শেখ হাসিনার অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়।
গত নির্বাচনগুলোর প্রসঙ্গ টেনে আমির খসরু বলেন, আওয়ামী লীগ বিগত নির্বাচনগুলোতে মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে। আজকে যাদের বয়স ৩০-৩২ হয়েছে, তারা বিগত নির্বাচনগুলোতে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি, তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারেনি। অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি, বরং অবনতি হয়েছে। এখন নিপীড়ন-নির্যাতনসহ ভোট চুরির প্রকল্প আরও অধিকতর শক্তিশালী হয়েছে। তারা ভোট চুরির প্রকল্পকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ বিচারবিভাগ থেকে শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সরকারি কর্মকর্তা, অধিকার থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদসহ একটা প্রজেক্ট করেছে, যে প্রজেক্টের মাধ্যমে আবারও তারা বাংলাদেশের মানুষের ভোট চুরির অভিপ্রায়ে কাজ করে যাচ্ছে। এখান থেকে মুক্ত হতে হলে আমাদের এক দফা দাবি- শেখ হাসিনার, এই সরকারের পদত্যাগ করতে হবে।
একটা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সংসদ বাতিল করতে হবে। নির্বাচন কমিশন বাতিল করে সকলের মতামতের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। সবকিছু সমাধান করে নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে একটি নির্বাচিত সংসদ গঠন করতে হবে, যারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে।
মার্কিন প্রতিনিধিদল কিছু বলছে কিনা– প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারা এসেছে পর্যবেক্ষণের জন্য, যেমন এসেছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তারা দেশের মানুষের সাথে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেবে পর্যবেক্ষক পাঠাবে কিনা। তারা এ দেশের জনগণের মতামত নেবে, সিদ্ধান্ত নেবে।