মঙ্গলবার, ১ জুলাই, ২০২৫

‘গণরুম, গেস্টরুম মুক্ত ঢাবি দিয়ে গেলাম, তোমরা রক্ষা করিও’– হলের দেয়ালে প্রতিরোধের গ্রাফিতি

-বিজ্ঞাপণ-spot_img

স্বৈরাচার আওয়ামী শাসনের ১৫ বছরে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা এক ত্রাসের রাজত্ব দেখেছে। ছাত্রলীগ হলের ভেতর-বাহির র‍্যাগিং, টর্চার সেল, গেস্টরুম সংস্কৃতি জারি করে রেখেছিল। জুলাই বিপ্লবে সেই অপশাসনের পতন ঘটেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সূর্য সেন হলে আঁকা এক গ্রাফিতি সেই অপশাসনের পতনের কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়। যেখানে লেখা ছিল–’গণরুম, গেস্টরুম মুক্ত ঢাবি দিয়ে গেলাম, তোমরা রক্ষা করিও’।

গ্রাফিতিটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সূর্যসেন হলের কোনো এক কক্ষের দেয়ালে এঁকেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০২তম ব্যাচের অর্থাৎ ২০২২-২৩ সেশনের কোনো শিক্ষার্থী।

স্পষ্ট ভাষায় উত্তরসূরিদের জন্য এক বার্তা দেওয়া সেই কক্ষের তথ্য ও অঙ্কনকারীর পরিচয় জানা যায়নি। তবে ছবিটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আলোচনা হচ্ছে। ছবিটি ভাইরাল হয়েছে চব্বিশের জুলাই বিপ্লবে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের বর্ষপূর্তির দিনে। আওয়ামী শাসনের পতনের পর গত এক বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে গেস্টরুম ও গণরুম সংস্কৃতির বদল ঘটেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের চলতে থাকা অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে এমন গ্রাফিতিকে এক জোরালো বার্তা হিসেবে দেখছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক শিক্ষার্থীরা।

এক শিক্ষার্থী জানান, দেশের প্রত্যেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে যুগ যুগ ধরে চলে আসা এই অভিশপ্ত সংস্কৃতিকে কিভাবে প্রতিরোধ করা যায়, স্লোগানটি নতুন করে শিক্ষার্থীদের মনে এমন আত্মোপলব্ধি ও গভীর অনুভূতির সঞ্চার করেছে।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০২তম ব্যাচ হলো গণরুম ও গেস্টরুমের শেষ ব্যাচ। এরপর ১০৩ ও ১০৪ তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে এসেছেন এবং গেস্টরুমমুক্ত ক্যাম্পাস পেয়েছেন।

এর মূল বার্তাটি স্পষ্ট যে, আর কোনো শিক্ষার্থী যেন গেস্টরুম ও গণরুমের মতো অমানবিক সংস্কৃতির শিকার না হয়।

স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়ে এখন শিক্ষার্থীরা আর চুপ থাকতে রাজি নয়। তারা তাদের অধিকার আদায়ে সোচ্চার।

একটি গ্রাফিতিটি শুধু লেখা হিসেবে নয়, এটি এক আন্দোলনের ফসল, নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের প্রতীক। স্মরণ করিয়ে দেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো জ্ঞানচর্চার কেন্দ্র হওয়া উচিত, ভীতিকর পরিবেশের আখড়া নয়। শীর উন্নত করে চলবে প্রত্যেক শিক্ষার্থী।  কোনো রাজনৈতিক নেতার কাছে নত হবে না তার শীর। একটি সীটের জন্য কারও পদলেহন করতে হবে না। 

শেয়ার করুন

সর্বশেষ নিউজ

এইচএসসি পরীক্ষার হলে অসুস্থ শিক্ষার্থী, রাজশাহী মেডিকেলে ভর্তি

রাজশাহীতে চলমান উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) পরীক্ষার সময় এক পরীক্ষার্থী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে পরীক্ষা কেন্দ্রে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। দ্রুততার সাথে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ...

জুলাই আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে ববি ছাত্রদলের নানা কর্মসূচি

চব্বিশের জুলাই মাসে শুরু হওয়া বিপ্লবের শেষ হয়েছিল ৫ আগস্ট। পতন ঘটে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের। ফ্যাসিস্ট শাসনের বিরুদ্ধে গৃহীত ঐতিহাসিক এই গণআন্দোলনের শহীদ ও...

১ যুগ পর জাতিসংঘে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে পাকিস্তান

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেছে পাকিস্তান। বিশ্ব যখন যুদ্ধ-বিগ্রহ, রাজনৈতিক বিভাজন ও আন্তর্জাতিক এই প্রতিষ্ঠানের কার্যকারিতা নিয়ে ব্যস্ত, তেমন গুরুত্বপূর্ণ সময়ে নিরাপত্তা...

নরসিংদীতে প্রকাশ্যে ডিস ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা

নরসিংদীতে ব্রাহ্মন্দী এলাকায় প্রকাশ্যে রিজভী (৩৫) নামে এক ডিস ব্যবসায়ীকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। সোমবার (৩০ জুন) রাত ১১টার দিকে নরসিংদী পৌরসভার...

সম্পর্কিত নিউজ

এইচএসসি পরীক্ষার হলে অসুস্থ শিক্ষার্থী, রাজশাহী মেডিকেলে ভর্তি

রাজশাহীতে চলমান উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) পরীক্ষার সময় এক পরীক্ষার্থী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে পরীক্ষা...

জুলাই আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে ববি ছাত্রদলের নানা কর্মসূচি

চব্বিশের জুলাই মাসে শুরু হওয়া বিপ্লবের শেষ হয়েছিল ৫ আগস্ট। পতন ঘটে স্বৈরাচার আওয়ামী...

১ যুগ পর জাতিসংঘে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে পাকিস্তান

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেছে পাকিস্তান। বিশ্ব যখন যুদ্ধ-বিগ্রহ, রাজনৈতিক বিভাজন ও...