গাজায় ইসরায়েলের নতুন হামলা শুরু হয়েছে, যা ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ‘শুরু মাত্র’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) ভোররাতে ইসরায়েলি সেনারা গাজায় ব্যাপক বোমা হামলা শুরু করে, যা রমজান মাসে সাহরি চলাকালে ঘটে। একদিনের মধ্যেই কমপক্ষে ৪০৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, এবং ৫৬২ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। হামলায় গাজায় বহু ভবন ধসে পড়েছে, এবং অনেক মানুষ ধ্বংসাবশেষের নিচে আটকে আছেন।
এই হামলা গাজায় ১৯ জানুয়ারি থেকে কার্যকর যুদ্ধবিরতির পর সবচেয়ে বড় আক্রমণ। হামলায় নিহতদের মধ্যে অনেকেই বেসামরিক নাগরিক, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুরাও রয়েছেন। বাড়ি-বাড়ি বোমা হামলা চালিয়ে তাদের হত্যা করা হয়েছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এক টেলিভিশন ভাষণে দাবি করেছেন, তারা যুদ্ধবিরতির মেয়াদ কয়েক সপ্তাহ বাড়িয়েছিল, কিন্তু এর বিনিময়ে তারা কোন জিম্মি মুক্তি পাননি। তিনি আরও জানান, ইসরায়েল দোহায় প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছিল এবং মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফের প্রস্তাবও গ্রহণ করেছিল। তবে, হামাস সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে।
ইসরায়েলি গণমাধ্যম জানাচ্ছে, উইটকফ উভয় পক্ষের কাছে একটি আপডেটেড প্রস্তাব পেশ করেছিলেন, যেখানে ৫০ দিনের যুদ্ধবিরতির জন্য বন্দি বিনিময়ের প্রস্তাব ছিল। হামাস সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেছিল, এবং দ্বিতীয় ধাপে আলোচনা শুরুর জন্য প্রস্তুত হয়েছিল। কিন্তু নেতানিয়াহু দাবি করেন, হামাস যদি তাদের বন্দি মুক্তি না দেয়, তাহলে তারা যুদ্ধ শুরু করবে এবং সেটি তারা করেছে।
বর্তমানে গাজায় ৫৯ জন ইসরায়েলি বন্দি রয়েছে, এর মধ্যে ২৪ জন জীবিত। বিপরীতে, ৯ হাজার ৫০০-এরও বেশি ফিলিস্তিনি ইসরায়েলি কারাগারে বন্দি আছেন, যাদের অনেকেই নির্যাতন ও চিকিৎসা অবহেলার শিকার হয়েছেন।
নেতানিয়াহু আরও বলেন, গাজায় নতুন আক্রমণ কেবল শুরু। তিনি সতর্ক করেন যে, হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েল ক্রমবর্ধমান তীব্রতা নিয়ে পদক্ষেপ নেবে, এবং তারা শুধুমাত্র আক্রমণের সময়েই আলোচনা করবে। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের যুদ্ধের লক্ষ্য পূরণ না করা পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাব।’
ইসরায়েলের এই হামলা এবং নেতানিয়াহুর বক্তব্য গাজার পরিস্থিতি আরও তীব্র করে তুলছে, যেখানে যুদ্ধবিরতি নিয়ে কোনো সমঝোতা সম্ভব না হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।