রাজধানীর গুলিস্তান এলাকার সিদ্দিকবাজারে ভবন বিস্ফোরণের ঘটনায় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে ভবনটির মালিক, তত্ত্বাবধানকারী ও কয়েকজন দোকানিকে।
বুধবার এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
ডিবির লালবাগ বিভাগের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে গতকাল মঙ্গলবার রাতে বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের ‘বাংলাদেশ স্যানিটারি’ নামের একটি দোকান মালিক আবদুল মোতালিব হোসেন ওরফে মিন্টুকে শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এরপর ভবনের মালিক ওয়াহিদুর রহমানকে নিয়ে যায় ডিবি। এ ছাড়া আরও কয়েকজনকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়ার তথ্যেরও সত্যতা মিলেছে।
ভবনটির মালিক রেজাউর রহমান নামে প্রয়াত এক ব্যক্তি। তিনি মারা যাওয়ার পর তাঁর তিন ছেলে ওয়াহিদুর রহমান, মশিউর রহমান ও মতিউর রহমান মালিক হন। তাঁদের মধ্যে বড় ভাই ওয়াহিদুর রহমান ও ছোট ভাই মতিউর রহমান ভবনটি পরিচালনা করেন। মেজ ভাই মশিউর রহমান লন্ডনপ্রবাসী।
বুধবার রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের কাছে বিধ্বস্ত ভবনের মালিক ও তত্ত্বাবধায়ককে আটক করা হয়েছে কি না, জানতে চাওয়া হলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমরা কাউকে আটক করিনি। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আমরা বাড়ির মালিক, দোকানমালিকদের ডেকেছি, তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করছি। যাঁরা আহত হয়েছেন, তাঁদের সঙ্গেও কথা বলছি।
ডিবি কর্মকর্তা বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের সময় তাঁদের কাছে আমরা জানতে চাইব, বাণিজ্যিকের নিয়মমতো বেজমেন্টে দোকান দেওয়ার কথা না, সুয়ারেজ লাইন, সেপটিক ট্যাংক, ওয়াটার রিজার্ভার—এগুলো নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ হতো কি না, তা আমরা জানতে চাইব। কার অবহেলায় এই হতাহতের ঘটনা ঘটল, তা জানতে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। এ ছাড়া বাহির থেকে কেউ এটা ঘটিয়েছে কি না বা এসব ঘটানোর সুযোগ আছে কি না, তা আমরা খতিয়ে দেখছি।
ডিবি ঘটনার ছায়া তদন্ত করছে জানিয়ে হারুন অর রশীদ বলেন, যেহেতু ভবন বিস্ফোরণের ঘটনায় কোনো মামলা বা সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়নি। তাই জিজ্ঞাসাবাদের তথ্যগুলো নিয়ে রাখা হচ্ছে। যাতে মামলা বা জিডি হলে এসব তথ্য তদন্তে সহায়ক হবে।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে গুলিস্তানে বিআরটিসির বাস কাউন্টারের পাশে সিদ্দিকবাজারে কুইন্স স্যানিটারি মার্কেট হিসেবে পরিচিত সাততলা ভবনে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে পাশের সাততলা ও পাঁচতলা দুটি ভবনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কুইন্স মার্কেটের সাততলা ভবনটির বেজমেন্ট, প্রথম ও দ্বিতীয় তলা বিধ্বস্ত হয়।
এছাড়াও বিস্ফোরণে পাঁচতলা ভবনের নিচতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ভবনের দ্বিতীয় থেকে পঞ্চম তলা পর্যন্ত ব্র্যাক ব্যাংকের কার্যালয়। এ বিস্ফোরণে অন্তত ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত তথ্য জানা গেছে। আহত হয়েছে শতাধিক ব্যক্তি। এখন পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছেন তিনজন।