গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশ ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিবিদ্ধ রমজান মুন্সী (৩২) নামে একজন রিকশাচালক ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
শুক্রবার (১৮ জুলাই) সকালে ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. ফারুক এই তথ্য নিশ্চিত করেছন। তিনি জানান, নিহতের মরদেহ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে।
নিহত রমজান মুন্সী গোপালগঞ্জ সদর থানাপাড়া এলাকার মৃত আকবর মুন্সীর ছেলে।
রমজান মুন্সীর আত্মীয় হীরা মুন্সী বলেন, ঘটনার দিন (বুধবার) দুপুরে গোপালগঞ্জ সদর এলাকায় সিনেমা হলের পাশেই রিকশা থেকে যাত্রী নামিয়ে ফেরার পথে আমার ভাই সহিংসতার মধ্যে পড়ে এবং গুলিবিদ্ধ হয়। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখান থেকে ১৬ জুলাই রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসি। বৃহস্পতিবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আমার ভাই মারা যায়। গোপালগঞ্জে সহিংসতার ঘটনায় এ নিয়ে পাঁচজনের মৃত্যু হলো। এর আগে গত বুধবার ঘটনার দিনই চারজন নিহত হন। তারা হলেন- মোবাইল ফোনের যন্ত্রাংশের দোকানি সোহেল মোল্লা (৩৫), পোশাক ব্যবসায়ী দীপ্ত সাহা (২৫), সিরামিক পণ্যের দোকান কর্মচারী ইমন তালুকদার (১৭) ও রাজমিস্ত্রির সহযোগী রমজান কাজী (১৮)।
এদিকে সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিবিদ্ধ সুমন বিশ্বাস (৩০) ও আব্বাস আলী (৩০) নামে আরও দুজন ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
গত ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশের আয়োজন ঘিরে সকাল থেকে উত্তাল পরিস্থিতি তৈরি করে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ। সকালে একটি পুলিশভ্যানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়,হামলা চালানো হয় ইউএনওর গাড়িতে, দুপুরে সমাবেশস্থলে চালানো হয় ভাঙচুর।
সভা শেষে ফেরার পথে এনসিপির গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটে। কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়া আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এ হামলা চালায় বলে অভিযোগ ওঠে। এ সময় গোপালগঞ্জ শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এরপর এনসিপির শীর্ষ নেতারা জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে গিয়ে অবস্থান নেন। পরে সেনাবাহিনীর সাজোয়া যানে তারা গোপালগঞ্জ ত্যাগ করেন।
রাত থেকে গোপালগঞ্জে কারফিউ জারি করা হয়।