আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কার্যবিধি, ২০১০-এ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংশোধন আনার খসড়া প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে, ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটরদের এবং তদন্ত কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তারের ক্ষমতা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
প্রসিকিউটররা এখন থেকে তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসামি গ্রেপ্তার করতে পারবেন। এর আগে, গ্রেপ্তারের ক্ষমতা শুধুমাত্র আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ছিল। নতুন সংশোধনীর ফলে, তদন্তের সময় প্রয়োজনে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকর করার ক্ষমতা ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ও তদন্ত কর্মকর্তাদেরও দেওয়া হচ্ছে।
২০১৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ১৪ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়, এবং তারপর আইনে কিছু সংশোধন আনা হয়। এটি সংশোধন আনার প্রথম উদ্যোগ। এর পাশাপাশি, গ্রেপ্তারের সময় যদি তদন্ত কর্মকর্তা ক্ষমতার অপব্যবহার করেন, তবে তার বিরুদ্ধে সাজার ব্যবস্থা রাখা হবে, এমন একটি প্রস্তাবও রয়েছে।
নতুন সংশোধনীর প্রস্তাব অনুযায়ী, গ্রেপ্তারের পর আসামিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ট্রাইব্যুনালের সামনে হাজির করতে হবে। পূর্বে, গ্রেপ্তার করার পর পুলিশকে বা তদন্ত কর্মকর্তাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আসামিকে ট্রাইব্যুনালের সামনে হাজির করতে হতো। তবে, নতুন বিধি অনুযায়ী, ট্রাইব্যুনাল বা যেকোনো জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে আসামি হাজির করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, ট্রাইব্যুনালের কিছু ক্ষমতা কমানোর কথাও বলা হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে, জবানবন্দি গ্রহণের সময় আইনজীবীর উপস্থিতির বিষয়টি, যা এখন সংশোধন করা হতে পারে। এছাড়া, তদন্ত চলাকালীন গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিধান এবং জব্দকৃত বস্তুর বিষয়ে বিশেষজ্ঞ মতামত নেওয়ার বিষয়টিও কার্যবিধিতে যুক্ত হতে পারে।
এ সকল সংশোধন আইন প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
এম বদরুদ্দোজা, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক, এ বিষয়ে মন্তব্য করেছেন যে, তদন্ত কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তারির ক্ষমতা দেওয়া হলে তারা তদন্তে আরো সাহসী হতে পারবেন। তবে, তিনি সতর্কতা অবলম্বন করে বলেন, যদি এই ক্ষমতার অপব্যবহার ঘটে, তবে সাজার ব্যবস্থা রাখা জরুরি।