পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের নেতা ইমরান খানকে দুর্নীতির এক মামলায় গ্রেফতার করার পর পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।
মঙ্গলবার (৯ মে) রাজধানী ইসলামাবাদে হাইকোর্টের বাইরে থেকে গ্রেফতার করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ইমরান খানকে।
পাঞ্জাব পুলিশের মহাপরিচালক এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘দুর্নীতি ও অনিয়মের’ অভিযোগে ইমরান খানকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেয়া হয়েছে
পুলিশের বিবৃতিতে বলা হচ্ছে, একটি রিয়েল এস্টেট কোম্পানির ৫০ বিলিয়ন রুপির বৈধতা দেয়ার বিনিময়ে কয়েক বিলিয়ন রুপি নেয়ার অভিযোগ রয়েছে ইমরান খান ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে। সেই মামলাতেই গ্রেফতার করা হয়েছে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে।
ইমরান খানের গ্রেফতারে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে পুরো পাকিস্তানে। লাহোর আর করাচিতে পুলিশ ইমরান খানের সমর্থকদের লক্ষ্য করে জলকামান এবং কাঁদানে গ্যাস ছেড়েছে। বিক্ষোভ হচ্ছে পেশাওয়ারেও।
ইসলামাবাদের রাস্তায় শত শত বিক্ষোভকারী রাজধানী থেকে বের হওয়ার ও ঢোকার প্রধান মহাসড়কটি অবরোধ করে রেখেছে। পিটিআই সমর্থকদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ জলকামান ছুড়েছে।
মানুষ রাস্তার সাইন উপড়ে ফেলেছে এবং রাস্তার ওপর দিয়ে চলাচলের ব্রিজ ভেঙে ফেলেছে, বিভিন্ন জায়গায় অগ্নিসংযোগ করেছে এবং পাথর ছুঁড়েছে। সে সময় ঘণ্টাখানেকের মতো ওই এলাকায় থাকা বিবিসির সংবাদদাতা সেখানে পুলিশ বা সরকারি কর্মকর্তাদের দেখেননি।
ফরিদা রওদাদ নামে এক বিক্ষোভকারী বলেন, ‘আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। আমরা আর কী করতে পারি? পাকিস্তানে আর কী করার আছে? আমরা সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কখনো কোনো কথা বলিনি, বললে হয়তো ভালো করতাম!’
‘এখন একটা নৈরাজ্য চলুক, বিশৃঙ্খলা ঘটুক। ইমরান না থাকার মানে পাকিস্তানে আর কিছু নেই। ক্ষমতা হাতে নেয়ার মতো আর কেউ এখানে নেই।’
ইসলামাবাদের পুলিশ সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছে, পাঁচজন পুলিশ অফিসার আহত হয়েছে এবং ৪৩ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার ইসলামাবাদে আদালত চত্বর থেকে ইমরান খানকে গ্রেফতার করা হয়। দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত ইমরান খান আজ আদালতে হাজিরা দেন। তিনি বলেছেন, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
গত বছর এপ্রিল মাসে ইমরান খানকে পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে বরাখাস্ত করা হয়। সে সময় থেকে তিনি আগাম নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রচারণা চালাচ্ছেন।
এবছর আরো পরের দিকে পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে।