চট্টগ্রামে এক মানববন্ধনের আয়োজন করে বাম সংগঠনগুলোর মোর্চা গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট। জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তির প্রতিবাদ এবং রাজশাহীতে গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়ে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। হঠাৎ-ই এই মানববন্ধনে চালানো হয় হামলা, ৩ জন গুরুতর আহতসহ ১২ জন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
শাহবাগবিরোধী ঐক্যের ব্যানারে এই হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট।
হামলার ঘটনায় অভিযোগের তীর ছাত্রশিবির এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশের নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধেও।
মানববন্ধনে হামলার আলোচনার পাশাপাশি একটা দৃশ্য নিয়েই দেশজুড়ে শুরু হয় তোলপাড়। আলোচনা-সমালোচনা, সেই দৃশ্যে এক নারী আন্দোলনকারীকে পেছন থেকে লাথি মারা হয়। লুটিয়ে পড়েন তিনি মাটিতে। আহত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন হাসপাতালে।
একজন নারীর ওপর এমন হামলার ঘটনাকে জুলাইয়ে ছাত্রলীগের চালানো হামলার সাথেই তুলনা করছেন নেটিজেনরা। জুলাই বিপ্লবের শুরুটায় যেখানে নারীদের ওপর হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিস্ফোরণ ঘটেছিল। পতন হয় স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের। এরপর নতুন বাংলাদেশ। এখানেই কেন ঘটবে এমন নারী নিগ্রহের ঘটনা।
কে সেই যুবক প্রশ্ন উঠছে সোশ্যাল মিডিয়ায়াজুড়ে। নারীকে হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত যুবকের পরিচয় পাওয়া গেছে। আকাশ চৌধুরী নামে ওই যুবক সাতকানিয়া উপজেলার বাসিন্দা। তবে তিনি জামায়াতের কোনো পদে নেই বলে নিশ্চিত করেছেন দলটির একাধিক নেতা। যদিও আকাশ চৌধুরীর সঙ্গে চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের আমির শাহজাহান চৌধুরীর একাধিক ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এর আগে আকাশ চৌধুরীর বিরুদ্ধে নগরের মুরাদপুরে সুন্নিদের কর্মসূচিতে হামলার অভিযোগ ছিল।
হামলায় শিবিরের সংশ্লিষ্টতার দাবি করে ছাত্রজোটের নেতাকর্মীরা বলেন, তারা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছিলেন। এ সময় অতর্কিতে শিবির সংশ্লিষ্ট একটি গোষ্ঠী তাদের ওপর হামলা চালায়। হামলার পর মানববন্ধন বন্ধ করতে বাধ্য হন তারা। পরবর্তী সময়ে তাদের ব্যবহৃত ব্যানার ছিঁড়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
অন্যদিকে শাহবাগবিরোধী মঞ্চের অংশগ্রহণকারীরা দাবি করেন, বামপন্থী সংগঠনগুলো আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে কাজ করছে এবং তারা এটিএম আজহারের ন্যায়বিচারকে মেনে নিতে পারছে না।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট চট্টগ্রাম মহানগরের সহ-সভাপতি পুষ্পিতা নাথ বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু এর আগেই ফেসবুকে নানা উস্কানিমূলক পোস্ট আসে। আজ আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা হয়েছে।
এদিকে ঘটনার সাথে ইসলামী ছাত্রশিবিরকে জড়ানোর প্রতিবাদ জানিয়েছে চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর শাখা। শাখার সভাপতি মো. তানজীর হোসেন ও সেক্রেটারি মুমিনুল হক এক বিবৃতিতে বলেন, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংঘটিত শাহবাগপন্থী ও শাহবাগবিরোধী দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ইসলামী ছাত্রশিবিরের নাম উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জড়িয়ে মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। এ ঘটনার সঙ্গে ছাত্রশিবিরের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
অন্যদিকে শাহবাগবিরোধী ঐক্যের প্রধান সমন্বয়কারী আবরার হাসান রিয়াদ বলেন, শাহবাগ আন্দোলনের নামে এসব বাম সংগঠন শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদ কায়েমে সহযোগিতা করেছিল। এখন তারা আবার ষড়যন্ত্র করছে। আমরা প্রতিহত করব।