বাংলাদেশ চতুর্থবারের মতো রোববার দেশে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত অং কিয়াও মোকে তলব করেছে এবং বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে সাম্প্রতিক ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে প্রতিবাদ জানানোর জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া শাখা) মো. নাজমুল হুদার কার্যালয়ে তলব করা হয়।
এর আগেও ঢাকা সীমান্তে মিয়ানমারের সাম্প্রতিক মর্টার শেল নিক্ষেপ, সীমান্তবর্তী এলাকায় নির্বিচারে আকাশপথে গোলাবর্ষণ এবং আকাশসীমা লঙ্ঘনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছে।
শনিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন,সরকার মিয়ানমারের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ ও কূটনৈতিকভাবে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে। তবে প্রয়োজনে সীমান্তে মিয়ানমারের মর্টার শেল নিক্ষেপের বিষয়ে জাতিসংঘে অভিযোগ জানানো হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদেরকে (মিয়ানমার) কয়েকবার সতর্ক করলেও তারা তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি।
তিনি আরও বলেন, ‘তুমব্রু সীমান্তে শুক্রবারে মিয়ানমারের মর্টার শেল নিক্ষেপে হতাহতের ঘটনায় আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছি।’
আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, ‘মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাত তার সীমান্তের মধ্যেই থাকা উচিত। কিন্তু তাদের বাহিনী বারবার সীমানা অতিক্রম করে বাংলাদেশি নাগরিকদের আহত করছে।’
তিনি বলেন, এ বিষয়ে মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সঙ্গে ক্রমাগত যোগাযোগ করা হচ্ছে এবং রোহিঙ্গাদের অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সতর্ক রয়েছে।
শুক্রবার রাতে বান্দরবানের তুমব্রুতে আন্তর্জাতিক সীমান্তের জিরো পয়েন্ট এলাকার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ছোড়া মর্টার শেল বিস্ফোরণে মোহাম্মদ ইকবাল নামে ১৭ বছর বয়সী এক রোহিঙ্গা কিশোর নিহত এবং পাঁচজন আহত হয়।
নিহত ও আহতরা সবাই জিরো পয়েন্ট রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা। ক্যাম্পটি বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের নো ম্যানস ল্যান্ড এলাকার সবচেয়ে কাছের ক্যাম্প হিসেবে পরিচিত।
রাত ৮টার দিকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পরপর চারটি মর্টার শেল পড়ে।
এর আগে, শুক্রবার দুপুরেও বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে অংঞাথোয়াই তঞ্চঙ্গ্যা (২২) নামে এক আদিবাসী যুবক গুরুতর আহত হয়।
মিয়ানমার সেনাবাহিনী বাংলাদেশের ভূখণ্ডে এ পর্যন্ত ১২টি মর্টার শেল নিক্ষেপ করেছে।