বলিউডে এক গভীর শোকের ছায়া—চলে গেলেন জনপ্রিয় অভিনেতা মুকুল দেব। শুক্রবার (২৩ মে) গভীর রাতে দিল্লিতে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল মাত্র ৫৪ বছর। দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থতায় ভুগছিলেন এই গুণী শিল্পী। অভিনেতা মনোজ বাজপেয়ী সামাজিক মাধ্যমে তাঁর মৃত্যুর খবর জানিয়ে লেখেন, একজন বন্ধু হারালাম। পরে দীপশিখা নাগপালও শোকবার্তায় লেখেন, মাত্র ৫৪ বছরে চলে গেল! বিশ্বাস করা কঠিন, মুকস।
মুকুল দেবের জীবন ছিল অভিনয় জগতের সীমানা ছাড়িয়ে অনেকদূর বিস্তৃত। বলিউড ছাড়াও তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন পাঞ্জাবি, বাংলা, মালয়ালি, গুজরাতি ভাষার ছবিতে। তাঁর চলচ্চিত্র জীবনের শুরু ১৯৯৬ সালে ‘দস্তক’ দিয়ে, যেখানে তিনি অভিনয় করেন একজন পুলিশ অফিসারের ভূমিকায়। এই ছবিতেই সুস্মিতা সেনের অভিষেক হয়।
কিন্তু অভিনয়ই ছিল না তাঁর একমাত্র পরিচয়। মুকুল ছিলেন একজন লাইসেন্সপ্রাপ্ত পাইলট, প্রশিক্ষণ নিয়েছেন ভারতের ‘ইন্দিরা গান্ধী রাষ্ট্রীয় উড়ান অ্যাকাডেমি’ থেকে। পাশাপাশি তিনি ছিলেন ভাষাপ্রেমী ও সংস্কৃতিমনা মানুষ। পুশতু ও ফার্সি ভাষায় দক্ষতা এবং আফগান সংস্কৃতির প্রতি গভীর অনুরাগ তাঁকে অনন্য করে তুলেছিল।
নয়াদিল্লির একটি পাঞ্জাবি পরিবারে জন্ম নেওয়া মুকুলের বাবা ছিলেন দিল্লি পুলিশের সহকারী কমিশনার। শৈশব থেকেই তিনি নানা সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে বড় হয়েছেন, যা তাঁর শিল্পীসত্তাকে গড়ে তুলতে বড় ভূমিকা রাখে।
মুকুল দেবের মৃত্যু শুধু চলচ্চিত্র জগতের নয়, বরং পুরো ভারতীয় সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলের জন্যই এক অপূরণীয় ক্ষতি। অভিনয়, আকাশপথ কিংবা ভাষার ভুবন—তিনিই ছিলেন এক ‘মাল্টি-ডাইমেনশনাল’ নায়ক। তাঁর হঠাৎ বিদায়ে শোকস্তব্ধ ভক্ত, সহকর্মী এবং সমগ্র বিনোদন জগৎ।