চাঁপাইনবাবগঞ্জে চাঁদাবাজদের চাপে পড়ে মহানন্দা ব্রিজ থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করলেন এসএসসি পরীক্ষার্থী শামীম। গোলাপের হাট এলাকায় বান্ধবীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে অপমান ও হুমকির শিকার হয়ে প্রাণ দেন ওই শিক্ষার্থী।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার টিকরামপুর গ্রামের মো. জালাল উদ্দিনের ছেলে শামিমের বয়স মাত্র ১৭। চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন তিনি। গত ৪ মে বিকেলে বন্ধুর সঙ্গে শিবগঞ্জ উপজেলার ঘোড়া পাখিয়া ইউনিয়নের গোলাপের হাট এলাকায় যান তিনি। উদ্দেশ্য ছিল টিকটকে পরিচয় হওয়া বান্ধবী প্রিয়ার সঙ্গে দেখা করা। কিন্তু সেখানে গিয়ে একদল অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি তাদের ঘিরে ফেলে। তারা শামিম ও তার বন্ধুকে মারধর করে এবং মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। পরে শামীমকে হুমকি দেয়— যদি ৫ হাজার টাকা না দেয়, তবে প্রিয়ার সঙ্গে জোর করে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হবে।
স্থানীয় লোকজন বা পরিবারের সদস্যরা জানান, “টাকা না দিলে বিয়ে দিব, এই কথা শুনে মানুষের সামনে অপমানিত হয়েছে।” চরম মানসিক চাপে পড়ে ফোন করে বাবার কাছে টাকা চান। কিন্তু অপমানের যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে সন্ধ্যা ৬ টার দিকে বীরশ্রেষ্ঠ মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সেতু থেকে মহানন্দা নদীতে ঝাঁপ দেন।
পরদিন, ৫ মে সকালে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল নদী থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নতদন্তের জন্য চাঁপাই নবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠান। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
প্রতিবেশীরা বলেন, ” শামীম খুব ভালো ছাত্র ছিল, এমন পরিণতি হবে ভাবতেই পারছি না।”
এদিকে পরিবার ও স্থানীয়রা দ্রুত ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে বিচারের দাবি জানিয়েছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও তদন্তের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
এমন হৃদয়বিদারক ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে, তরুণদের নিরাপত্তা নিয়ে, আর চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্যে ইস্যুতে প্রশাসনের কতটুকু নজরদারি রয়েছে।