রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় চাঁদাবাজি করতে গিয়ে তোপের মুখে পড়েছেন ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের তিন নেতা। তারা হলেন- ঢাকা কলেজ শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শেখ পারভেজ মোশাররফ, মাসুদুর রহমান জীবন ও রাব্বি হোসেন।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বেশ কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, দোকানীরা এ তিন ছাত্রদল নেতাকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিচ্ছেন। চাঁদাবাজ বলে টানা হেছড়া করছে। “ঢাকা কলেজের নামে চাঁদাবাজি চলবে না, চলবে না”, “ছাত্র দলের নামে চাঁদাবাজি চলবে না, চলবে না”- বলে স্লোগান দিচ্ছেন। এর আগেও একবার ফুটপাতের দোকান দখল করতে গেলে পারভেজ মোশাররফকে শোকজ করে ছাত্রদল।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক দোকানী জানায়, ব্যবসায়ীর কাছ থেকে দেড় লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেন ছাত্রদলের এই তিন নেতা। পরে ব্যবসায়ীরা চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন এবং ছাত্রদল নেতা জীবনকে মারধর করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন। এসময় তোপের মুখে পড়েন পারভেজ মোশাররফ ও রাব্বি হোসেন।
অনুসন্ধানে জানাযায়, ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক পিয়াল হাসান ও সদস্য সচিব মো. মিল্লাদ হোসেনের নেতৃত্বে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে কয়েকজন ছাত্রদ নেতা। নিউমার্কেট এলাকার অধিকাংশ ফুটপাত তাদের দখলে। এ নিয়ে মাঝেমধ্যে আন্তকোন্দলেও জড়িয়েছেন পিয়াল ও মিল্লাতের অনুসারীরা। সাইন্সল্যাব অংশের ফুটপাত দখলে নিয়ে চলছে ঢাকা কলেজ ও স্থানীয় ছাত্রদলের সঙ্গে দীর্ঘদিনের কোন্দল।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের সদস্য মাসুদুর রহমান জীবন বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। চাঁদাবাজি প্রতিরোধ করতে গিয়েছিলাম আমরা। সেখানে আমাদের চাঁদাবাজ হিসেবে বলা হয়েছে। মব তৈরি করা হয়েছে। আমরা ষড়যন্ত্রের শিকার।
আরেক অভিযুক্ত কলেজ ছাত্রদলের সদস্য শেখ পারভেজ মোশাররফ বলেন, লিমন নামে এক দোকানীকে আওয়ামী লীগের দোষরা (চাঁদাবাজরা) হুমকি দিয়ে আসছিলেন। এ বিষয়ে ঐ ভুক্তভোগী দোকানীদের সঙ্গে কথা বলতে যাই আমরা। একপর্যায়ে নিউমার্কেটের স্থানীয় লোকজন আমাদেরকে চাঁদাবাজ বলে ভিডিও করে এবং হেনস্তা করে। আমাদের কোন কথা বলতে না দিয়ে পরিকল্পিত ভাবে এসব ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। চাঁদাবাজির সঙ্গে আমি কিংবা আমরা কেউই জড়িত নই।
চাঁদাবাজির বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা কলেজ শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক পিয়াল হাসান এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
ঢাকা কলেজ শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব মো. মিল্লাদ হোসেন বলেন, ঢাকা কলেজ এবং সেন্টাল ছাত্রদল থেকে প্রকৃত ঘঠনাটি উদঘাটন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ছাত্রদলের কেউ অন্যায়ে জড়িত হলে তার বিষয়ে সাংগঠনিক শাস্তি মূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে দ্রত সময়ের মধ্যে।
এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করেননি ঢাকা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অধ্যাপক পারভিন সুলতানা হায়দার।
সার্বিক বিষয়ে জানতে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ নাছির উদ্দীন নাছিরের কাছে একাধিকবার ফোন করা হলেও তাদের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।