ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনের নির্বাচন নিয়ে মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিএনপি।
এক বিবৃতিতে দলটি জানিয়েছে, ‘চীন বাংলাদেশে সংবিধান অনুযায়ী আসন্ন নির্বাচন দেখতে চায়’ রাষ্ট্রদূত ওয়েনের এমন মন্তব্য জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন নয়।
শনিবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে এক সেমিনারে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন দেখতে চায় চীন।
এ বিষয়ে বিএনপির প্রতিক্রিয়া জানাতে এক বিবৃতিতে রিজভী বলেন, রাষ্ট্রদূতের মন্তব্যটি এমন এক সময়ে এসেছে, যখন সমগ্র জাতি গণতন্ত্রের জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভোটের অধিকার ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ পুনরুদ্ধারের প্রয়াসে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবি জানাচ্ছে। চীনা রাষ্ট্রদূতের মন্তব্য জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন নয়।
তিনি বলেন, জনগণের একটি বিশাল অংশ গত ১০ বছরে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাননি। তাই দেশের বিপুল জনগোষ্ঠী ক্ষমতাসীন ও কর্তৃত্ববাদী শেখ হাসিনার অধীনে নয়, বরং নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন চান।
তবু বাস্তবতাকে অস্বীকার করে বর্তমান সংবিধানের অধীনেই নির্বাচন হতে হবে জানিয়ে ফ্যাসিস্ট সরকার একগুঁয়েমি আচরণ ও নজিরবিহীন বলপ্রয়োগ অব্যাহত রেখেছে।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব এ সময় বাংলাদেশকে নিয়ে ওয়াও ইয়েনের উদ্বেগকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র ও সংসদীয় গণতন্ত্র প্রবর্তনকারী দল হিসেবে বিএনপি সব সময় সেই সংবিধানের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ, যা জনগণ দ্বারা অনুমোদিত ও গৃহীত। দুঃখজনকভাবে ভোট ডাকাতির মাধ্যমে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার অপপ্রয়াসে বিতর্কিত সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানকে কাটাছেঁড়া করেছে অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকার।
‘বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ব্যবসা, বাণিজ্য, জ্ঞান ও অন্যান্য দ্বিপক্ষীয় স্বার্থের ভিত্তিতে। বিএনপি বিশ্বাস করে, দুই দেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনেই কূটনৈতিক সাফল্য নিহিত। তাই বিএনপি চীনকে আহ্বান করছে, বাংলাদেশের জনগণের অভিপ্রায় ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়াদির প্রতি আলোকপাত করার জন্য’, যোগ করেন রিজভী।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, দেশের মানুষের চলমান সংগ্রামে বিএনপি সর্বাত্মক সমর্থন প্রত্যাশা করে, যেন অচিরেই বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্পন্ন হয়।