ময়মনসিংহের ত্রিশালে স্থানীয় এমপির লোকজনের বিরুদ্ধে এক ছাত্রকে তুলে নিয়ে মারধর করে থানায় সোপর্দ করার প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধে নামেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এ ঘটনায় উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়ক অবরোধ করে মহাসড়কে আগুন জ্বালিয়েছে।
রোববার (১০ মার্চ) রাত ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে রাখে তারা। পরে মিছিল নিয়ে থানার দিকে যাওয়ার সময় তাদের ধাওয়া দেয় স্থানীয় এমপি এবিএম আনিসুজ্জামানের অনুসারীরা। প্রায় আধা ঘণ্টা উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়।
একপর্যায়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা মহাসড়কে এসে ১০ থেকে ১২টি গাড়ি ভাঙচুর করে। তখন তাদের আবার ধাওয়া করে এমপির লোকজন।
এ সময় উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইমরানসহ ৫-৬ জন আহত হন। তাদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোমিনুল হাসান সোহান জানান, বিকালে উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য ফয়সাল মহিলা কলেজের সামনে একটি কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টারে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিল। সেখান থেকে বর্তমান এমপির লোকজন তাকে তুলে নিয়ে যায়। এমপির বাসায় ফয়সালের ওপর অমানবিক নির্যাতন করে থানায় সোপর্দ করা হয়।
আরেক ছাত্র নেতা শেখ শান্ত সরকার বলেন, শনিবার পৌর নির্বাচন নিয়ে ফয়সাল ফেসবুকে একটি পোস্ট দেয়। ওই পোস্টকে কেন্দ্র করে তাকে তুলে দিয়ে মারধর করে বর্তমান এমপিসহ তার লোকজন।
উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাসান মাহমুদ বলেন, ফয়সালকে আটকের কথা শুনে থানায় যাই। ওসি সাহেবের সঙ্গে কথা হয়। তিনি জানান, ফয়সালের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই।
উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য ফয়সাল বলেন, আমি কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টারে প্রশিক্ষণ দিচ্ছিলাম। আমাকে এমপির বাসায় নিয়ে হকিস্ট্রিক দিয়ে পেটায়। তারা কস্টেপ মোড়ানো বলের মতো ককটেল আমার হাতে দিয়ে এমপির বাড়িতে হামলার স্বীকারোক্তি নেয়। পরে আমাকে থানায় দিয়ে দেয়।
তিনি জানান, আমি ফেসবুকে পোস্ট করেছিলাম ‘পৌরসভার নয়টি ওয়ার্ডের মেয়র (পৌর মাতা), নয় সন্তানের মায়ের কী হল।’ পরে পোস্ট ডিলেট করে দিয়েছি। তাদের কাছে ক্ষমাও চেয়ছি ভুল হয়েছে।এমপি এবিএম আনিসুজ্জামানের স্ত্রী পৌরসভা নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছেন।
ফয়সালকে তুলে নিয়ে মারধরের বিষয়ে জানতে এমপির পক্ষের একাধিক নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ত্রিশাল থানার ওসি মো. কামাল হোসেন বলেন, ফয়সালকে এমপির লোকজন থানায় দিয়ে যায়। তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। তাকে মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।