মিফতা হাসান, এমসি কলেজে প্রতিনিধি
সম্প্রতি স্নাতকোত্তরের ফল প্রকাশের পরপরই ছাত্রাবাস ছেড়েছেন ঐতিহ্যবাহী মুরারিচাঁদ (এমসি) কলেজ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি ইসমাইল খান সৌরভ।
বুধবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি থেকে এ সংক্রান্ত একটি পোস্ট করে হল ছাড়েন তিনি।
ফেসবুক পোস্টে সৌরভ লেখেন, ‘প্রিয় ভাইয়েরা, আমি এমসি কলেজ ছাত্রাবাস থেকে চলে আসলাম। ছাত্রাবাসে কাটানো মুহুর্তগুলো লিখতে হাত কাঁপছে। বুকের ভেতর অদ্ভুত একটা ভার অনুভব করছি। এমসি কলেজ ছাত্রাবাস ছিল আমার দ্বিতীয় পরিবার, গড়ে উঠার আশ্রয়স্থল।’
তিনি লেখেন, আপনারা আমাকে দিয়েছেন অগাধ সমর্থন, অকৃত্রিম সহযোগীতা….এই বিদায়ের মুহুর্তে আমি রেখে যাচ্ছি কিছু স্বপ্ন, বিশ্বাস আর একটি সংস্কৃতি ভাঙার দৃঢ় প্রয়াস।’
এদিকে ছাত্রত্ব শেষ হওয়ায় নিজ উদ্যোগে তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।
নেতাকর্মীরা জানান, সৌরভ এমসি কলেজ ছাত্রাবাসের সপ্তম ব্লকের বিজয় ২৪ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন। একই সাথে তিনি এই হলের ছাত্রাধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। সম্প্রতি স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ হাওয়ায় ছাত্রশিবির সভাপতি সৌরভের ছাত্রত্ব শেষ হয়েছে। তাই তিনি হল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তার এমন সিদ্ধান্ত এমসি কলেজের রাজনীতিতে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে বলে ধারণা করেন তারা।
নেতাকর্মীরা আরও জানান, ছাত্রত্ব শেষ হওয়ার সাথে সাথে হল ছাড়ার এই মনোভাব ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ পরবর্তী নতুন ধারার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। যা নতুন প্রজন্মের প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটাতে পারে।
এর আগে মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) রাতে সৌরভের হল ছাড়ার বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেন এমসি কলেজ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক অলিদ হোসেন।
মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে পোস্টটি। এরপর থেকেই দলীয় ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রশংসায় সরব হয়ে ওঠে ফেসবুক।
অলিদ হাসান ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘শিক্ষাজীবন শেষ হলেও হোস্টেলের সিট দখল করে থাকা এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে দীর্ঘদিনের একটি সংস্কৃতি ছিল। বিশেষ করে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের বহিরাগত, অছাত্র, এমনকি কথিত ছাত্রনেতারা শিক্ষক সমাজকে জিম্মি করে বছরের পর বছর সিট দখল করে রেখেছিল। সম্প্রতি স্নাতকোত্তরের ফল প্রকাশের পরপরই এমসি কলেজ ছাত্রশিবিরের সভাপতি সৌরভ ভাই হোস্টেল ছেড়েছেন। ছাত্র রাজনীতিতে এমন পদক্ষেপ সকল সংগঠনের থাকা উচিত।’
এ বিষয়ে সভাপতি ইসমাইল খান সৌরভ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী ছাত্রত্ব শেষ হলেই হল ছাড়তে হয়। সম্প্রতি আমি স্নাতকোত্তোর উত্তীর্ণ হওয়ায় আমার ছাত্রত্ব শেষ হয়েছে। তাই ছাত্রাবাসের সিট ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তাছাড়া আমরা যারা স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছি তারা সিট ছেড়ে দিলে নতুন শিক্ষার্থীদের জন্য সুযোগ তৈরী হবে। এতে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার সুবিধা হবে।’