নবাগত শিক্ষার্থীদের উদ্বোধনী ক্লাসের দিন তাদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বের করা মিছিলে না যাওয়ায় নাটোরের বড়াইগ্রাম সরকারি অনার্স কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের তিন শিক্ষার্থী জুয়েল রানা, শহিদুল ইসলাম ও ইমনকে কান ধরে উঠবস করিয়েছে কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি শিপন আহমেদ ও তার অনুসারীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নবাগত শিক্ষার্থীদের সামনে তাদেরকে শ্রেণিকক্ষের মধ্যে ৫ বার করে কান ধরে উঠবস করানোর পর ঠিকমতো কান না ধরার অভিযোগ এনে ইমনকে আরও ৫ বার কান ধরে উঠবস করতে বাধ্য করা হয়।
নতুন করে ঝামেলায় পড়ার ভয়ে এসব বিষয়ে কোনো অভিযোগ করেনি লাঞ্ছিত হওয়া শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে কলেজের একাধিক শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীরা জানান, গত রোববার একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া নবাগত শিক্ষার্থীদের উদ্বোধনী ক্লাস অনুষ্ঠিত হয়। সেদিন তাদের শুভেচ্ছা জানিয়ে মিছিল বের করে কলেজ ছাত্রলীগ। মিছিলে সকল সাধারণ ছাত্রদের বাধ্যতামূলকভাবে ছাত্রলীগের মিছিলে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় রসায়ন ক্লাস চলায় বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা মিছিলে যেতে পারেনি।
মিছিল শেষে কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি শিপন আহমেদ ও তার অনুসারীরা এসে শ্রেণিকক্ষে জুয়েল রানা, শহিদুল ইসলাম ও ইমনকে বসে থাকতে দেখে। ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা মিছিলে না যাওয়ার কারণ জানতে চায়। তিন শিক্ষার্থী এ সময় মিছিলে না যাওয়ায় ক্ষমা চায়। কিন্তু কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি শিপন আহমেদ ও তার অনুসারীরা ক্ষমা না করে তাদের ৫ বার করে কান ধরে উঠবস করায়।
জানা যায়, ঠিকমতো কান না ধরার অভিযোগ এনে ইমনকে আরও ৫ বার কান ধরে উঠবস করতে বাধ্য করা হয়। এ সময় কলেজ ক্যাম্পাসে কান ধরে উঠবস করানোর এসব দৃশ্য একাদশ শ্রেণির অসংখ্য নবাগত শিক্ষার্থী দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখলেও কেউ কোনো প্রতিবাদ করার সাহস পায়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জুয়েল রানা বলেন, সেদিনের বিষয়ে কথা বলে আর কষ্ট বাড়াতে চাই না।
এ ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত শিপন আহমেদের সা তার মোবাইলে কল করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
ওই কলেজের আওয়ামীপন্থী শিক্ষক নেতা আমিনুল হক মতিন বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ঘটনার পর লাঞ্ছনাকারী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা তার কাছে এসে ক্ষমা চেয়েছেন।
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বাদশা উল্লাহ জানান, কলেজের কাজে তিনি ঢাকায় অবস্থান করায় এসব বিষয়ে কিছু জানেন না।