জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের বিচার নিশ্চিতে গড়িমসি এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কতৃক হামলাকারী ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের পুনর্বাসনের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (৫ মার্চ) দুপুর একটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন জুলাই আন্দোলনে শহীদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ক্ষমতায় বসলেও হামলায় মদদদাতা শিক্ষক ও হামলাকারীদের বিচার নিশ্চিত না করে বরং পুনর্বাসন করছে তাদের।
মানববন্ধনে ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (আইবিএ) শিক্ষার্থী ফারহানা ফারিনা বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনে ছাত্রলীগের দ্বারা শিক্ষার্থীদের ওপর যে হামলা হয়েছে তার বিচার নিশ্চিত করবেন এরকম অঙ্গীকার করেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চেয়ারে বসেছে। কিন্তু আজকে প্রায় সাত মাস হতে চললেও এ প্রশাসন কোন ধরনের তদন্ত রিপোর্ট পেশ করতে পারেনি। আমরা দেখতে পাচ্ছি বিভিন্ন বিভাগের সভাপতিরা জেলে থাকা, হাসপাতালে থাকা ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের পরীক্ষায় বসার সুযোগ করে দিচ্ছেন। এ থেকে আমরা মনে করি আপনারা প্রশাসন হিসেবে ব্যর্থ।’
মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল বলেন, যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শহীদ ও আহতদের রক্তের বিনিময়ে চেয়ারে বসেছে তারা গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটকে ধারণ করতে পারেনি। আমরা যখন প্রশাসনের কাছে বিচার চেয়েছি তারা তদন্ত কমিটি গঠনের নামে গড়িমসি করেছে, বারবার তদন্ত রিপোর্ট পিছিয়েছে। এ থেকে আমরা বুঝতে পারি তারা ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের পুনর্বাসনের চেষ্টা করে যাচ্ছে। ১৫ জুলাই শিক্ষার্থীদের ওপর যে ন্যাক্কারজনক হামলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিধিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারতো কিন্তু তারা সেটাও করেনি।
তিনি আরো বলেন, গণঅভ্যুত্থানের পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি নজির স্থাপন করেছিল। যে শামীম মোল্লা সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করতো, ১৫ জুলাই উপাচার্যের বাসভবনে শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি চালিয়েছে সেই শামীম মোল্লাকে আটক করে শিক্ষার্থীরা পুলিশের কাছে দিয়েছিল। এর দুই ঘণ্টা পর শামীম মোল্লার মৃত্যুর খবর আসে, এই মৃত্যু শিক্ষার্থীদের হাতে নয় বরং পুলিশের নির্যাতনে হয়েছে। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তদন্ত ছাড়াই বিপ্লবীদের নামে মামলা করেছে। কিন্তু গণ অভ্যুত্থানের সাত পেরিয়ে গেলেও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে পারেনি। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই দ্রুত ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের বিচার নিশ্চিত করুন নাহলে সচেতন শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে কঠোর কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হবো।