পিরোজপুর নার্সিং ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে ইনস্টিটিউটের ইনচার্জ এবং ইনস্ট্রাক্টরদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। মিজান নার্সিং ইনস্টিটিউটের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং তিনি সিরাজগঞ্জের তারাস উপজেলার আবু তালেবের ছেলে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিলের অধীনে পাবলিক পরীক্ষায় এক বিষয়ে ফেল করার পর মিজান ইনস্টিটিউটের কর্তৃপক্ষকে চাপ দিতে শুরু করেন এবং ইনচার্জ বেবী রায়সহ অন্যান্য ইনস্ট্রাক্টরদের বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি দেন।
গত ১১ মার্চ নার্সিং পরীক্ষার ফলাফলে মিজান এক বিষয়ে অকৃতকার্য হন। এরপর তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা এবং নার্সিং সমন্বয়কদের মাধ্যমে ইনস্টিটিউটের কর্তৃপক্ষকে ফোন করে পাশ করানোর জন্য চাপ দিতে থাকেন। তবে ফলস্বরূপ তার দাবি মেনে নেওয়া হয়নি এবং তিনি ইনস্ট্রাক্টরদের হুমকি দিতে শুরু করেন। মিজান অভিযোগ করেছেন, তার পরীক্ষা নেওয়া হয়নি এবং শিক্ষকরা তাকে পাশ করানোর জন্য চাপ দিচ্ছিলেন।
ইনস্ট্রাক্টররা জানিয়েছেন, মিজান ক্লাসে অমনোযোগী ছিলেন এবং প্রথম বর্ষেই এক বিষয়ে ফেল করেছিলেন। যদিও তারা তাকে নিয়ে কোন অভিযোগ করেননি, তবে এখন তিনি তাদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের হুমকি দিচ্ছেন। নার্সিং ইনস্টিটিউটের ইনস্ট্রাক্টর সাজেদা খানম বলেন, “এটি একটি স্বাভাবিক ঘটনা যে, পরীক্ষায় ফেল করা কোনো শিক্ষার্থীর জন্য হতাশাজনক, তবে তার এমন আচরণটি অযৌক্তিক।”
নিপা মন্ডল, এক শিক্ষক, বলেন, “মিজান প্রথম বছর থেকে ক্লাসে অনিয়মিত ছিল এবং পরীক্ষায় ফেল করেছে। তার এই আচরণে আমরা সবাই হতাশ।”
এ বিষয়ে ইনস্টিটিউটের নার্সিং ইনস্ট্রাক্টর ইনচার্জ বেবী রায় বলেন, “মিজান গত ৫ আগস্টের পর থেকে ইনস্টিটিউটে তার রাজনৈতিক প্রভাব দেখাচ্ছে এবং পরীক্ষা ছাড়াই পাশ করানোর জন্য বিভিন্ন চাপ সৃষ্টি করছে। তিনি এখনও আমার নামে মিথ্যাচার করছেন এবং মামলা করার হুমকি দিচ্ছেন।”
অপরদিকে, মিজান এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমি কোন খারাপ কথা বলিনি। তারা আমার শিক্ষক, আমি কখনো তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে চাইনি।”
এদিকে, এক শিক্ষার্থী জানান, মিজান আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে নানা সুবিধা নিয়েছে এবং তার পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে কোনো প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, “মিজান পরীক্ষায় ফেল করেছে, যা স্বাভাবিক বিষয়, কিন্তু তার এই ধরনের আচরণ খুবই অযৌক্তিক।”
এ বিষয়ে এখনো তদন্ত চলছে এবং ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে।