বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর সামনে জেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের পেটানোর অভিযোগে বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহরম আলীকে ক্লোজ করা হয়েছে। তাকে বরগুনার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে যুক্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় আরও ১১ জনকে ক্লোজ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে বরগুনার পুলিশ সুপার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এ ঘটনা তদন্তে বরিশাল ডিআইজি অফিস বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এসএম তারেক রহমানকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি এসএম আক্তারুজ্জামান তার নিজ কার্যালয়ে মঙ্গলবার দুপুরে সাংবাদিকদের বলেন, সার্বিক দিক বিবেচনা করে ও তদন্তের স্বার্থে মহরম আলীকে বরিশালে আমার কার্যালয়ে নিযুক্ত করা হয়েছে।
ডিআইজি বলেন, বরগুনার ঘটনা দেশজুড়ে আলোচনার সৃষ্টি করেছে। ও ঘটনায় পুলিশের পেশাদারিত্ব কতটা ছিল, ঘটনাস্থলে কি কি হয়েছে সব কিছুই তদন্ত করা হবে। ছাত্রলীগের দুটি ধারার এক পক্ষ পুলিশের প্রশংসা করেছে আরেক পক্ষ সমালোচনা করছে। তবে পুলিশ তার নিরপেক্ষ অবস্থান থেকেই সবকিছুর তদন্ত করবে।
জানা যায়, সোমবার জাতীয় শোক দিবসে বরগুনা শিল্পকলা একাডেমিতে জেলা প্রশাসনের আয়োজিত শোক সভার অনুষ্ঠান চলছিল। জেলা ছাত্রলীগের নবাগত কমিটির একাংশ বঙ্গবন্ধু স্মৃতি কমপ্লেক্সে রক্ষিত জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে ফেরার পথে শিল্পকলা একাডেমির তৃতীয় তলা থেকে কে বা কারা ইটপাটকেল ছুড়ে। এতে পুলিশের গাড়ির একটি গ্লাস ফেটে যায়। মুহূর্তের মধ্যে দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহরম আলীর নেতৃত্বে একদল পুলিশ শিল্পকলা একাডেমিতে প্রবেশ করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নির্বিচারে পেটাতে থাকে।
সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু তখন শিল্পকলা একাডেমির হল রুমে বসা ছিলেন। তাৎক্ষণিক তিনি বের হয়ে মহরম আলীকে ছাত্রলীগ নেতাদের পেটাতে নিষেধ করেন। এমনকি তিনি মহরমের হাত ধরে বলেন, যে ছেলেটি ইট ছুড়েছে তাকে আমি আপনাদের কাছে সোপর্দ করব। এতে মহরম আরও ক্ষিপ্ত ও উত্তেজিত হয়ে সংসদ সদস্যের সঙ্গে বাম হাত তুলে অশোভন আচরণ করেন।
ছাত্রলীগ নেতা জসিম মোল্লা ও স্বাধীন প্রতিবাদ করলে এমপির সামনেই তাদের পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে ধরে নিয়ে যায়। এতে বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের একাংশ মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
এদিকে পুলিশ সুপারের এমন আচরণ নিয়ে সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু বলেন, মহরম আলী সোমবার ছাত্রলীগের ছোট ছোট বাচ্চাদের যেভাবে নির্যাতন করেছেন, তাতে ক্লোজ করলেই বিচার শেষ হয়ে যাবে না। বাচ্চাদের কেন অকারণে পেটাল তার জন্য মহরমের শাস্তির আওতায় আসতে হবে। দেশের মানুষ জানবে অপরাধ করলে যে কোনো পেশার লোক শাস্তি পায়।
বরগুনার পৌর মেয়র কামরুল আহসান মহারাজ বলেন, সোমবার দুপুরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহরম আলী একজন এমপির সঙ্গে যে ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন, তাতে আমি অবাক হয়েছি।