ঢাবি প্রতিনিধি: চারদিন ‘নিখোঁজ’ থাকার পর ফিরে আসা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক খালেদ হাসানের ছোটবেলা থেকেই ‘জিনের আছর’ আছে বলে দাবি করেছেন খালেদের বাবা লুৎফর রহমান। তিনি জানান, ঠিক এই কারণে খালেদ এর আগেও একবার নিখোঁজ হয়েছিলেন। যদিও খালেদের দাবি, তিনি এ বিষয়ে (জিনের আছর) আগে থেকে জানতেন না।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (ডুজা) কার্যালয়ে খালেদের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে ডাকা এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন।
এর আগে, গত শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) থেকে নিখোঁজ হওয়া শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের এই আবাসিক শিক্ষার্থী গত মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে হলে প্রবেশ করেন। পরে রাতেই তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরের দিন খালেদকে দেখতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান হাসপাতালে যান এবং তার শারীরিক অবস্থা ও চিকিৎসার খোঁজ খবর নেন। তবে তার নিখোঁজ হওয়া এবং ফিরে আসার তথ্যে শিক্ষার্থীদের মনে নানা প্রশ্নের উদ্রেক হয়। খালেদ গুম হয়েছিলেন নাকি নিজেই আত্মগোপনে ছিলেন, এ নিয়ে অনেকেই সন্দিহান ছিলেন। অনেকের দাবি, আত্মপ্রচারেরের জন্য আত্মগোপনে ছিলেন খালেদ। এসব প্রশ্নের জবাব দিতে অবশেষে বাবাসহ সংবাদ সম্মেলনে আসেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে লুৎফর রহমান বলেন, খালেদের ছোটবেলা থেকেই জিনের আছর আছে। ৯ম বা ১০ম শ্রেণিতে থাকাকালীন সে একবার এরকম নিখোঁজ হয়ে যায়। পরবর্তীতে কয়েকদিন পরে তাকে পাওয়া যায়; কিন্তু এই বিষয়টি আমরা খালেদকে জানাইনি।
ডাক্তারের বরাত দিয়ে খালেদের বাবা জানান, সে বর্তমানে মানসিক ও শারীরিকভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ।
ডাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য সবার দৃষ্টি ফেরাতে এতো দিন আত্মগোপনে থাকার অভিযোগের ব্যপারে জানতে চাইলে খালেদ বলেন, ডাকসু নিয়ে এখনও আমার কোনো পরিকল্পনা নেই। আমি দাঁড়াবো কি না সেটি এখনও ঠিক করিনি। তবে যদি দাঁড়াই তার জন্য আমাকে এ ধরনের পথ বেছে নিতে হবে এমনটি আমার মনে হয় না। তবে ডাকসু নিয়ে আমার এখনও কোনো প্ল্যান নেই।
খালেদ এখন এই সমস্যার জন্য নিজের মানসিক অবস্থাকেই দায়ী করছেন। যদিও তার বক্তব্যে অনেকটা গড়মিল লক্ষ্য করা গেছে। তিনি এর আগে দাবি করেন, সুনামগঞ্জ, পঞ্চগড় ও বরিশাল ঘুরেছেন। কিন্তু এদিন তিনি জানান, চট্টগ্রাম, পঞ্চগড় ও সুনামগঞ্জ এলাকায় ঘুরেছেন। তিনি বলেন, পঞ্চগড়ে গিয়ে গরুর মাংস দিয়ে ভাত খেয়েছি। আমার সাথে চারজন ছিলো।
কিছু মনে করতে না পারলে ‘ভাত খাওয়া’ বা ‘সাথে চারজন থাকা’ এসব কিভাবে বলতে পারছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন ঠিকমতো কোনোকিছু মনে করতে পারছি না।