জনগণের আন্দোলন রুখে দিতে আওয়ামী লীগ নতুন ষড়যন্ত্র করতেছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, মানুষ যখন তাদের অধিকার আদায়ে চূড়ান্ত আন্দোলন শুরু করেছে তখন তা রুখে দিতে আওয়ামী লীগ নতুন ষড়যন্ত্র করছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সম্প্রতি একটি সভায় এমন কথা বলেছেন, এতে মনে হচ্ছে মানুষের যে উত্থান তা রুখে দেওয়ার জন্য নতুন চক্রান্ত শুরু করেছেন তারা।
মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে ইউনাইডেট ল ইয়ার্স ফ্রন্ট আয়োজিত আইনজীবী সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বিএনপি বাংলাদেশে অরাজকতা সৃষ্টি করার জন্য সীমান্তে অস্ত্র জমা করছে।’ কী ভয়ংকর কথা! এমন একটা সময় তিনি এ কথা বলছেন, যখন জনগণ চূড়ান্ত আন্দোলন শুরু করেছে তাদের অধিকার আদায় করার জন্য। সেই সময় এ ধরনের কথা বলে নতুন চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র শুরু করার পাঁয়তারা করছে আওয়ামী লীগ।
তিনি বলেন, এতো বড় রাজনৈতিক সংকট স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে এসেছে বলে আমরা জানা নেই। আমরা লক্ষ্য করছি, ক্ষমতাসীন সরকার জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে, বোকা বানিয়ে রাষ্ট্রে সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে ফেলেছে। বাংলাদেশকে একটা কর্তৃত্ববাদী ও ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। এখান থেকে বেরিয়ে আসা গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর জন্য অত্যন্ত কঠিন কাজ। তবে জনতার শক্তির কাছে কোনো শক্তিই টিকে থাকতে পারে না।
এই সমস্ত কথা বলে আপনারা যদি আবার জনগণের ওপর অস্ত্র ব্যবহার করেন তাহলে দায়-দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে বলে হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, ষড়যন্ত্র হলে জনগণ তার জবাব দেবে। অত্যন্ত পরিকল্পিত ও সুচিন্তিতভাবে আওয়ামী লীগ সহিংসতা ছড়িয়ে দিতে চায়। তাদের যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের একটা কর্মসূচি ছিল ২৪ জুলাই, সেটাকে তারা ২৭ জুলাই পরিবর্তন করেছে। কেন? উদ্দেশ্য একটাই, তারা সহিংসতা চায়, অস্থিতিশীলতা করতে চায়। তখনই একটা পক্ষ সংহিসতা চায়, যখন তারা জনসমর্থন হারিয়ে ফেলে। এটা প্রমাণিত যে, আওয়ামী লীগ সম্পূর্ণ জনসমর্থন হারিয়ে ফেলেছে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ২৭ তারিখ আমরা মহা-সমাবেশ ডেকেছি। কোনো চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র করে এটাকে নস্যাৎ করা যাবে না। আমি কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানাতে চাই, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের সমস্ত ব্যবস্থা করবেন। অন্যথায় তার দায়-দায়িত্ব সরকার, কর্তৃপক্ষ ও যারা দায়িত্বে আছেন তাদের বহন করতে হবে।
সমাবেশে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমি এক দলকে ক্ষমতা থেকে নামিয়ে অন্য দলকে ক্ষমতায় বসাতে লড়াই করি না। বরং ক্ষমতার পালাবদলে দেশটা যেন বদলে যায়, সেজন্য লড়াই করছি। আমরা মন্ত্রিত্বের জন্য লড়ছি না, অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য লড়ছি।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ২৭ তারিখের মহাসমাবেশ হবে জনতার মুক্তির মহাসমাবেশ। এ মহাসমাবেশে জনতার রাজপথ জনগণই দখল নেবে। জনগণ এ সরকারকে সরিয়ে নতুন বাংলাদেশের সূচনা করবে। যে বাংলাদেশ হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ।
ইউনাইটেড ল ইয়ার্স ফ্রন্টের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেএসডির সভাপতি আ.স.ম আব্দুর রব, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম প্রমুখ।