বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় বলেই জনবিচ্ছিন্ন সরকার জনগণের দুঃখ, দুর্দশা লাঘবে উদাসীন।
তিনি বলেন, অর্থনীতিতে সরকারের ভ্রান্তনীতির কারণে দেশের অর্থনীতি ধ্বংসপ্রায়। এখন ধ্বংসের মুখোমুখি অর্থনীতিকে জোড়াতালি দিতে জনগণের ওপর ছুরি চালাচ্ছে ভোটারবিহীন সরকার। তথাকথিত উন্নয়নের ভেলকিবাজিতে দেশের মানুষ এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
ইউরিয়া, টিএসপি, ডিএপি ও এমওপি সারের দাম কেজিতে ৫ টাকা বাড়ানোর সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
আজ বুধবার (১২ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিশ্ববাজারে ইউরিয়া সারের দাম ৬২ শতাংশ, ডিএপির ২৪ শতাংশ ও টিএসপির ২৫ শতাংশ কমলেও আন্তর্জাতিক বাজারে সারের মূল্যবৃদ্ধির অসত্য তথ্য দিয়ে ফের দাম বৃদ্ধির এই সিদ্ধান্ত কৃষক ও জনস্বার্থবিরোধী। কৃষকের সাথে প্রতারণার শামিল। জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় বলেই জনবিচ্ছিন্ন সরকার জনগণের দুঃখ, দুর্দশা লাঘবে উদাসীন। আট মাসের ব্যবধানে সারের দাম বৃদ্ধি উদ্বেগজনক।
দিকে কৃষি পণ্যের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না প্রান্তিক কৃষকেরা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিদ্যুৎ, জ্বালানি তেল, বীজ-সার-কীটনাশকসহ কৃষি উপকণের মূল্যবৃদ্ধি ও কৃষি শ্রমিকের মুজুরী লাগামহীন বৃদ্ধিতে কৃষি উৎপাদন খরচ আগেই বেড়েছে। অন্য কৃষি পণ্যের বিক্রয় ও মূল্য পাবার ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন দলের আশীর্বাদপুষ্ট মধ্যসত্ত্বভোগী, টাউট, ফড়িয়াদের দৌরাত্মে আরো বিপর্যয়কর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এমনিতে সরকারের দুর্নীতি, লুটপাট, ভ্রান্তনীতি, অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্ত, অব্যবস্থাপনা, সমন্বয়হীনতায় নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি, অর্থনৈতিক সঙ্কট, ব্যবসা-বাণিজ্যে মন্দা, কাজ হারানোর ফলে মানুষ বিপর্যস্ত। এখন আবার নতুন করে সারের দাম বৃদ্ধিতে কৃষকসহ জনসাধারণ দিশেহারা। সরকারের সারের মূল্য বৃদ্ধির গণবিরোধী সিদ্ধান্তের ফলে কৃষক ও জনসাধারণ তীব্র সঙ্কটে পড়বে।
মির্জা ফখরুল বলেন, জনগণের পকেট কাটতে নানা ফন্দি-ফিকির চালিয়ে একের পর এক গণবিরোধী সিদ্ধান্ত নিচ্ছে অবৈধ সরকার। দেশের শতকরা ৮০ ভাগ জনগোষ্ঠী কৃষির ওপর নির্ভরশীল। কৃষকেরা লোকসানে পড়ে কৃষি উৎপাদনে উৎসাহ হারিয়ে ফেলছে। কৃষকেরা কৃষি উৎপাদন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হবে।
বৈশ্বিক মন্দা ও আন্তর্জাতিক বাজারের দোহাই দিয়ে একের পর এক জনস্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ড করছে নিশিরাতের ভোটের সরকার মন্তব্য করে তিনি বলেন, তারা যদি মুখ ফিরিয়ে নেয়, তাহলে সেটি হবে দেশের সমস্ত জনগোষ্ঠীর জন্য বিরাট অশনি সংকেত। । জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় বলেই জনগণের কাছে তাদের কোনো জবাবদিহিতা নেই এবং তারা জনস্বার্থের কথা চিন্তাও করে না। নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করতে বিশ্ববাজারে মূল্যবৃদ্ধির মিথ্যা তথ্য দিয়ে আবার সারের মূল্যবৃদ্ধি মরার ওপর খাঁড়ার ঘা।
অবিলম্বে জনস্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ড থেকে সরে আসাসহ সারের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহারের দাবি জানান বিএনপির মহাসচিব।