কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার আল্লারদর্গা এলাকায় বর্ষার বৃষ্টিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা চরম রূপ নিয়েছে। এতে ভয়াবহ দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয় কয়েক হাজার বাসিন্দা। বিশেষ করে, আল্লারদর্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও একই প্রাঙ্গণে অবস্থিত ট্রেসল ইংলিশ ভার্সন স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্যঝুঁকি ও শিক্ষাবিঘ্নে পড়েছেন। গত ১৩ জুলাই থেকে বৃষ্টির পরিমান বাড়ার সাথে সাথে বাড়তে থাকে এই জলাবদ্ধতা।
প্রায় দেড় হাজার শিক্ষার্থী প্রতিদিন পানির মধ্যে হেঁটে বিদ্যালয়ে আসতে বাধ্য হচ্ছে। স্কুল ভবনের নিচতলার সব শ্রেণিকক্ষ ও মাঠ জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। শ্রেণিকক্ষে জমে থাকা পানিতে ভাসছে পচা আবর্জনা, যার তীব্র দুর্গন্ধে ক্লাস নেওয়া অসম্ভব হয়ে উঠেছে। ফলে ১৬ জুলাই বুধবার থেকে দুইটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই সাময়িকভাবে ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামরুল হাসান জানান, “এবারের জলাবদ্ধতা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে ভয়াবহ। যদি দ্রুত নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না করা হয়, তাহলে দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে।” তিনি আরও জানান, আগামী রোববার থেকে পুনরায় ক্লাস চালুর চেষ্টা করা হবে।
এ জলাবদ্ধতার মূল কারণ হিসেবে উঠে এসেছে সঠিক পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকা। শিক্ষার্থীদের একজন, নবম শ্রেণির পিয়াস জানায়, “প্রতিদিন পানি ডিঙিয়ে স্কুলে যেতে হচ্ছে। এর ফলে চর্মরোগে ভুগছি।” অষ্টম শ্রেণির তানিমের কথায়, “জলাবদ্ধতায় ক্লাস হওয়াই দুষ্কর হয়ে উঠেছে, তাই স্কুল ছুটি দেওয়া হয়েছে।”
এ দুর্ভোগ শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নয়, হোগলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদেও সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষ সমস্যার মুখে পড়ছেন। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিম চৌধুরী জানান, “জলাবদ্ধতা নিরসনে বারবার বললেও এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।”
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা না থাকলেও তার দপ্তরের একাডেমিক সুপারভাইজার কামাল হোসেন জানিয়েছেন, দুই বিদ্যালয় পরিদর্শন করা হয়েছে এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল হাই সিদ্দিকী জানান, জলাবদ্ধতা শুধু পরিবেশগত নয়, একটি শিক্ষাগত ও সামাজিক সংকটও বটে। দ্রুত পানি নিষ্কাশনের উদ্যোগ না নিলে ভবিষ্যতে এই দুর্ভোগ আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। এজন্য দ্রুতই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ।
মোঃ সাজ্জাদ হোসেন