একটা অনুষ্ঠানে ডাক পড়লো এমন একজনের, যিনি ফ্যাসিবাদের মুখপাত্র বলেই পরিচিত। আর সেই মঞ্চটা তৈরি করলো জামায়াতে ইসলামী।
মূলত, গতকাল বুধবার (২৩ এপ্রিল) রাতে কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে জামায়াতে ইসলামীর আয়োজন। বাহ্যিকভাবে বলা হয়— ‘সম্প্রীতি ও বহুত্ববাদ’ নিয়ে আলোচনা।
একপর্যায়ে মঞ্চে উঠলেন সন্তোষ শর্মা।
একজন সাবেক সম্পাদক। আবার একইসাথে একনায়কতন্ত্রের পক্ষে সরব এক মুখ।
তার পরিচয়? একসময় ‘কালবেলা’ পত্রিকায় ছিলেন। পত্রিকাটি বিরোধী দলের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচারে যুক্ত ছিল বলে অভিযোগ আছে। সরকারের একপক্ষকে রক্ষা করতেই কাজ করতো এই পত্রিকা— এমনটাই বলছে বিভিন্ন মহল।
সন্তোষ শর্মা শুধু সম্পাদক নন, স্বৈরাচারী সরকারের দোসর হিসেবেও পরিচিত। গুম, খুন, বেআইনি গ্রেফতার— এসব যাদের শাসনকালে হয়েছে, তার ছিল নীরব সঙ্গ।
অনেকে বলেন, সে সময়কার অন্ধকার অধ্যায়ের অন্যতম নেপথ্য মানুষ ছিলেন তিনি। এমন একজনকে জামায়াত মঞ্চে জায়গা দেবে— এটা কি সাধারণ মানুষ ভাবতে পেরেছিল, নাকি জামায়াত নিজেই নিজেদের আদর্শ থেকে সরে আসছে?
প্রশ্ন উঠেছে— জামায়াত কি তবে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী দোসরদের পুনর্বাসন শুরু করলো, না কি আদর্শিক বিভ্রান্তির মধ্যেই হারিয়ে যাচ্ছে দলটি?
আওয়ামী লীগের আমলে, সবচেয়ে নির্যাতিত দলের মঞ্চেই উঠেছে এমন এক চরিত্র— যার হাত ধরে একসময় দমন-পীড়ন চালানো হয়েছে দেশের মানুষের ওপর।
এই ঘটনা শুধু বিতর্কই নয়, বরং জামায়াতের অবস্থান নিয়েও নতুন করে প্রশ্ন তোলে। সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনার মঞ্চের কিছু ছবিও ভাইরাল হয়েছে। যেসব ছবির ক্যাপশনে জামায়াতে অবস্থান নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করছেন নেটিজেনরা৷
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নামে যদি পুরনো স্বৈরাচারীদের জায়গা হয়— তাহলে সাধারণ মানুষের আস্থা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে এমন জিজ্ঞাসাও ছাত্র-জনতার।
এদিকে, সন্তোষ শর্মার বিষয়ে কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, কালকের প্রোগ্রামটি আমরা সাংবাদিকদের নিয়ে করিনি। বরং সেটি ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের নিয়ে প্রীতি সমাবেশ ছিল। সেখানে কালবেলা পত্রিকার সম্পাদক সন্তোষ শর্মা বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বক্তব্য দিয়েছেন।
এসময় তিনি আরো বলেন, তিনি একটা সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে এসেছিলেন। এখন আমি একটি সংগঠনের সম্পাদককে বাদ দিয়ে তো শুধু সভাপতিকে দাওয়াত দিতে পারি না। আমরা ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের নেতৃবৃন্দদের নিয়ে বসেছিলাম। সেই জায়গায় অন্য বিষয়গুলো সেদিন অপ্রাসঙ্গিক ছিল।