ইসলামী লেখক ও ব্লগার শফিউর রহমান ফারাবি দীর্ঘ ১১ বছর কারাবন্দি থাকার পর জামিন পেয়েছেন। মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) হাইকোর্ট তার জামিন মঞ্জুর করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম-মহাসচিব, লেখক ও গবেষক মুফতি হারুন ইজহার।
তিনি বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর হাইকোর্ট ফারাবি ভাইয়ের জামিন মঞ্জুর করেছেন। যদিও রাষ্ট্রপক্ষ একাধিকবার শুনানি এড়িয়ে গিয়েছিল, শেষ পর্যন্ত তারা অংশ নিতে বাধ্য হয়েছে।’
হারুন ইজহার আশা প্রকাশ করে বলেন, এই জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র আর কোনো আপিল করবে না। এবং তার মুক্তির পথে যেন কোনো প্রশাসনিক বা আইনি বাধা তৈরি না হয়— সেটাই এখন আমাদের প্রত্যাশা।
তিনি দাবি করেন, আমরা আদালতকে বোঝাতে পেরেছি যে, ফারাবি ভাই নির্দোষ। তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। মূলত মিডিয়া ট্রায়ালের মাধ্যমে তাকে ফাঁসানো হয়েছিল। যারা গুম-খুনের সঙ্গে জড়িত ছিল, তাদের অতি উৎসাহী ভূমিকা, শাহবাগপন্থী গোষ্ঠী এবং কিছু প্রভাবশালী গণমাধ্যম এই হয়রানির পেছনে ছিল।
তিনি আরও জানান, জামিন কার্যকরের আগে কিছু আনুষ্ঠানিকতা বাকি রয়েছে। মামলার প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া চলছে। সেটি শেষ হলেই তার মুক্তি কার্যকর হবে।
২০১৫ সালের ২ মার্চ ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ডের পর যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে ফারাবিকে গ্রেফতার করে র্যাব। এরপর একাধিক মামলায় তাকে অভিযুক্ত করা হয় এবং এক মামলায় আদালত তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।
তবে ফারাবির পরিবার ও সমর্থকদের দাবি, তিনি কেবল ইসলামপন্থী লেখক ছিলেন। তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং রাজনৈতিক হয়রানিমূলক।
ফারাবির মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন সময় দেশের নানা স্থানে প্রতিবাদ, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ হয়েছে। ২০২৪ সালের ২২ নভেম্বর ‘বৈষম্যহীন কারামুক্তি আন্দোলন’ ব্যানারে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে সর্বশেষ একটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
হারুন ইজহার বলেন, আমরা চাই, রাষ্ট্র একজন নিরপরাধ মানুষকে মুক্ত করতে সহায়তা করুক। কোনো বাধা যেন আর না আসে।