গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমকে বরখাস্তের আদেশ কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
বরখাস্তের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের করা রিটের শুনানি শেষে মঙ্গলবার বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রুল জারি করেন। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে জাহাঙ্গীর আলমের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মশিউর রহমান সবুজ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
গত ১৪ আগস্ট রিটটি করা হয়। ১৭ আগস্ট শুনানি শেষে বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামানের বেঞ্চ আদেশের জন্য আজ দিন ধার্য করেন।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে জাহাঙ্গীরের একটি মন্তব্যের অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে তোলপাড় শুরু হয়। ওই অডিওতে মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদ এবং বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা নিয়ে ‘বিতর্কিত’ মন্তব্য করেন তিনি। ওই ঘটনায় জাহাঙ্গীরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় আওয়ামী লীগ, তিনি তার জবাবও দেন। তবে কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় জাহাঙ্গীরকে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত আসে। এরপরই ওই বছরের ২৫ নভেম্বর তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে প্রজ্ঞাপন দেয় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।
প্রজ্ঞাপনে মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে ভুয়া টেন্ডার, আরএফকিউ, বিভিন্ন পদে অযৌক্তিক লোকবল নিয়োগ, বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে ভুয়া বিল-ভাউচারের মাধ্যমে ও একই কাজ বিভিন্ন প্রকল্পে দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ এবং প্রতিবছর হাট-বাজার ইজারার অর্থ যথাযথভাবে নির্ধারিত খাতে জমা না রাখাসহ নানা অভিযোগের কথা উল্লেখ করা হয়।
এর আগে ২০১৮ সালে গাজীপুর সিটি করপোরশেন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে দলীয় প্রতীকে মেয়র নির্বাচিত হন জাহাঙ্গীর আলম।
এদিকে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের নিয়ে ‘বিতর্কিত মন্তব্যের’ অভিযোগে দেশের বিভিন্ন জেলায় হওয়া সাতটি মামলায় সম্প্রতি ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন পেয়েছেন মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম। বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. সেলিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ থেকে এই জামিন আদেশ হয়।