ঝালকাঠি সদর উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়নের উদচড়া গ্রামে এক প্রতিবন্ধী পরিবারের ঘরবাড়ি জোরপূর্বক দখল এবং মালামাল লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) ভোরবেলা এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওই পরিবারের পক্ষ থেকে মো. বেল্লাল মৃধা গত বুধবার (৯ এপ্রিল) ঝালকাঠি সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, সামছুল হক মৃধার পুত্র শহিদ মৃধা, তার ছেলে আল আমিন মৃধা, মো. আবু বক্কর মৃধা, মো. নুরুনবী মৃধা, শহিদের কন্যা কুলসুম ও স্ত্রী ফুলসোনা বেগম পূর্বপরিকল্পিতভাবে ঘরে ঢুকে বসবাসরত প্রতিবন্ধী পরিবারের সদস্যদের জোরপূর্বক ঘর থেকে বের করে দেয়। ঘরের মালামাল বাইরে ছুড়ে ফেলে দিয়ে স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ টাকা লুটে নেয় এবং ঘরটি দখলে নেয়।
বাদী বেল্লাল মৃধার দাবি, তিনি ২০০১ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর ১৪ শতাংশ জমিসহ একটি টিনশেড ঘর ৫০ হাজার টাকায় কিনে নেন। এ সংক্রান্ত একটি চুক্তিপত্রে দুই পক্ষ স্বাক্ষর করলেও জমিদাতা সামছুল হকের মৃত্যুজনিত কারণে রেজিস্ট্রি সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। বিষয়টি নিয়ে প্রায় ১৪ বছর আগে তিনি আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তের জন্য ৯ এপ্রিল উকিল কমিশনের সরেজমিনে পরিদর্শনের কথা থাকায় তার আগেই বিবাদীপক্ষ ঘর দখলে নেয় বলে অভিযোগ।
ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে গাভারামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের বিএনপির সাবেক সভাপতি ও প্রতিবেশী সৈয়দ হুমায়ূন কবীর বলেন, “আমি নিজে সালিশে বসেছিলাম, কিন্তু বিবাদীরা কোনো সালিশ মানেনি। তারা যে কাজ করেছে তা অমানবিক ও অমানুষিক। প্রতিবন্ধী শিশু নিয়ে একটি পরিবার আজ খোলা আকাশের নিচে দিন কাটাচ্ছে—এটা খুবই হৃদয়বিদারক।”
এ বিষয়ে ঝালকাঠি সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান সাংবাদিকদের জানান, “অভিযোগটি তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেছে। অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিনের বাসিন্দা প্রতিবন্ধী পরিবারের ওপর এই ধরনের হামলা ও দখলের ঘটনা নিঃসন্দেহে সামাজিক মূল্যবোধ ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। দ্রুত বিচার ও পুনর্বাসনের দাবি জানাচ্ছেন এলাকাবাসী।