যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহকে ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে সরিয়ে নিতে চাপ দেন। কিন্তু বাদশাহ আবদুল্লাহ দৃঢ়ভাবে সেই প্রস্তাব উপেক্ষা করে বলেন, গাজা পুনর্গঠন ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে নয়, তাদের নিয়েই করা হবে। এই বিষয়ে আরব দেশগুলো একমত হয়েছে।
মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প ইঙ্গিত দেন, গাজা যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হবে এবং সেখানে তাদের পুনর্গঠন কার্যক্রম শুরু করা হবে। তিনি দাবি করেন, এর মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যের বিপুলসংখ্যক মানুষের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং এটি শান্তি আনবে।
তবে, ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা নিয়ে আরব দেশগুলো বিশেষত জর্ডান হতাশা প্রকাশ করেছে। তার প্রস্তাব অনুযায়ী, গাজাবাসীকে মিসর ও জর্ডানসহ অন্যান্য দেশে পাঠানো হবে এবং তাদের আর গাজায় ফেরত পাঠানো হবে না। গাজাকে একটি ‘মধ্যপ্রাচ্যের সমুদ্রসৈকত’ হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা করা হয়।
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ট্রাম্প বলেন, গাজাকে নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হবে এবং এর পুনর্গঠনের মাধ্যমে সেখানে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা হবে। তবে জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ তার দেশের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুত না করে গাজা পুনর্গঠন করা উচিত এবং এর মাধ্যমে মানবিক সংকট মোকাবিলা করা প্রয়োজন।’
ট্রাম্প জর্ডান এবং মিসরের সাথে তাদের সম্পর্কের মাধ্যমে গাজাবাসীকে স্থানান্তরের জন্য চাপ দিতে চেয়েছেন, কিন্তু বাদশাহ আবদুল্লাহ সরাসরি এর বিরোধিতা করেছেন। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে জানান, গাজা পুনর্গঠনের জন্য আরবদের একতাবদ্ধ অবস্থান এই যে, ফিলিস্তিনিদের সরানো হবে না।
ট্রাম্প বলেছেন, তিনি বিশ্বাস করেন জর্ডান ও মিসর শেষ পর্যন্ত গাজার বাস্তুচ্যুত বাসিন্দাদের নিতে সম্মত হবে, কারণ তারা মার্কিন সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। তিনি আরও বলেন, তিনি জর্ডান ও মিসরকে বিপুল পরিমাণ অর্থ সহায়তা দিয়েছেন, তবে এতে কোনো হুমকি নেই।
গাজাবাসীদের নেওয়ার বিষয়ে বাদশাহ আবদুল্লাহ ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনায় কিছু শর্ত দেন এবং বলেন, দুই হাজার গাজাবাসী শিশুকে চিকিৎসার জন্য জর্ডানে নেওয়া হবে। তবে তিনি আরও বলেন, আরব নেতারা ওয়াশিংটনে এসে কিভাবে সবার জন্য মঙ্গলজনক সমাধান বের করা যায় তা খুঁজে বের করবেন।
এই বৈঠকের সময় ট্রাম্প ও বাদশাহ আবদুল্লাহ সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ করেন, তবে গাজা নিয়ে ট্রাম্পের মন্তব্য বাদশাহকে কিছুটা অস্বস্তিতে ফেলেছিল।