বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির পদত্যাগের দাবি কয়েকদফায় বিভিন্ন মহল থেকে উঠেছে। সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করতে না পারার জন্যইএমন কথা বারবার উঠছে। এ নিয়ে এবার বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন, ট্রিগার টেপাটা তো ইজি। গুলি একবার বেরিয়ে গেলে তো ফেরত আনা যাবে না। তার আগে আমাদের চেষ্টা করতে দেন। সে জন্য আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে।
বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর গুলশানে ইস্টার্ন ব্যাংক আয়োজিত এক অনুষ্ঠান শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের মুখোমুখি হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
সংসদের ভেতরে-বাইরে যে কথাটা একটি মহল বারবার বলছে—আপনার হাতে ট্রিগার আছে কিন্তু আপনি গুলি করেন না, সময় নেন; প্রশ্নের জবাবে গণমাধ্যমকর্মীদেরকে টিপু মুনশি বলেন, গুলি করাটাই শেষ সমাধান না। আমরা মনে করি, আমাদের সব রকমভাবে চেষ্টা করতে হবে। এমন কিছু ব্যবস্থা নিলাম যে, হঠাৎ করে সাপ্লাই চেইনটা বন্ধ হয়ে গেল; এতে তো হিতে বিপরীত হবে। সে জন্য আমাদের সব দিক লক্ষ্য করেই কাজ করতে হয়। হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে গেলে তো ভোক্তাদের আরও কষ্ট হবে-বাড়বে।
তিনি বলেন, যার জন্য আমরা চাই যে, আলোচনা করে আইনের মধ্যে থেকে দ্রব্যমূল্য ঠিক রাখতে। ট্রিগার টেপাটা তো ইজি। গুলি একবার বেরিয়ে গেলে তো ফেরত আনা যাবে না। তার আগে আমাদের চেষ্টা করতে দেন। সে জন্য আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি, যাতে করে সম্ভব হয়।
মন্ত্রী বলেন, দ্রব্যমূল্য সহনীয় রাখতে সরকার সচেষ্ট। প্রকৃতপক্ষে দুদিকের কথাই শুনতে হয়। আমরা চেষ্টা করি, সমন্বয় করে যতদূর পারা যায় সব দিক সমাল দিতে।
আপনারা দেখছেন, আমরা সব রকমভাবে চেষ্টা করছি। কতগুলো আইটেম আছে যেটা বৈশ্বিক দামের ওপর নির্ভর করে। সেটা আমরা চেষ্টা করি, যে দাম সেটা সমন্বয় করতে।
টাইম টু টাইম আমরা ভেরিফাই করি উল্লেখ করে তিনি বলেন, দাম যেখানে কমানো দরকার কমাই। মূল্যস্ফীতির বৈশ্বিক প্রভাব পড়েছে। অনেক দেশ ভালো করছে, আমরাও চেষ্টা করছি। যাতে করে মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা যায়।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশি পণ্য, যেমন কৃষি পণ্য; এটা কৃষি মন্ত্রণালয়ের কাজ। কৃষি মন্ত্রণালয় যেদিন আমাদের জানালো, এই দাম এখন হওয়া দরকার, আমরা সেদিনই সেই দাম ঘোষণা করলাম। এটা সমন্বয় করেই করছি আমরা। আমাদের ওপর চাপ পড়ে কিন্তু বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সব মন্ত্রণালয়কে সঙ্গে নিয়েই কাজ করে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এক সময় তেলের দাম ২০৫ টাকা হয়েছিল। সেটা তো এখন টাইম টু টাইম বিশ্ববাজারে কমে যাওয়ার কারণে আমরা অনেক কমিয়ে নিয়ে এসেছি। প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কমে গেছে। গত সপ্তাহেও পাঁচ টাকা কমানো হয়েছে। আমরা সম্পূর্ণ সমন্বয় করছি। আমরা তো বৈশ্বিক পরিস্থিতির শিকার।
আন্তর্জাতিক বাজারে যে হারে কমছে, এখানে সে হারে কমেছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা সেভাবে হিসাব করে দাম নির্ধারণ করি।’
বাড়লে যেমন সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে, কমলে তো সঙ্গে সঙ্গে কমে না—গণমাধ্যমকর্মীদের এমন প্রশ্নে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এটা সত্যি কথাই বলেছেন। সুযোগটা ব্যবসায়ীরা নেয়। তবে এর উল্টো দিকও ব্যবসায়ীরা বলে।
এ সময় আলু ব্যবসায়ীদের কথার সূত্র ধরে তিনি বলেন, এই আলু যখন রাস্তায় ফেলে দিয়েছে দাম না পাওয়ার কারণে; তারা বলছেন, তখন তো পাশে এসে দাঁড়াননি আপনারা! এসব কথা তারা বলে। প্রকৃতপক্ষে দুদিকের কথাই শুনতে হয়। আমরা চেষ্টা করি, সমন্বয় করে যতদূর পারা যায় সব দিক সমাল দিতে।