দেবিদ্বার প্রতিনিধি:ডিবি ও সিআইডি সেজে কুমিল্লা দেবিদ্বারে পথচারী অপহরণ করতে গিয়ে জনতা হাতে আটক হয় আন্তঃজেলা সাদা পোশাকের ভুয়া ডিবি সদস্যসহ একটি মাইক্রোবাস। খবর পেয়ে দেবিদ্বার থানা পুলিশের একটি টিম গাড়িসহ ভুয়া ডিবি সদস্যকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, অপহরণের কবল থেকে বেঁচে পড়া দেবিদ্বারের দুই বন্ধু মো. হান্নান ও ইসমাইল বলেন, বুধবার দিবাগত রাত ৮:৩০ মিনিটের সময় আমরা দুজন বাজার করে অটোরিকশা যুগে (থানা গেইটের পশ্চিমে) বাসায় ফিরছিলাম। দেবিদ্বার রেয়াজ উদ্দিন পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে আসার পর বাঁশ দিয়ে আমাদের বেরিকেট দেয়। অটোরিকশাটি থামানোর সাথে সাথে কোন কিছু না বলেই, চারজন সাদা পোশাকের লোক ডিবির পরিচয়ে একটি সাদা মাইক্রো বাসে আমাদের টেনে হিঁচড়ে তুলার চেষ্টা করেন। হঠাৎ এমন অলৌকিক ঘটনা দেখে জোরাজোরি করে মো. হান্নান সরকার ছুটে দৌড়ে দূরে চলে যান। তার সাথে থাকা তার বন্ধু মো. ইসমাঈলকে জোর পূর্বক গাড়িতে তুলে মাইক্রোবাসটি সিলেট মুখি রওনা করে। ততক্ষণে ফের হান্নান সরকার ছুটে এসে আশেপাশের সকলের কাছে পুরো ঘটনা বলেন। সাথে সাথে সেখানকার কয়েকজন যুবক মোটরসাইকেল নিয়ে মাইক্রোবাসটিকে ফলো করেন। দ্রুত গতির মাইক্রোবাসটি দৌড়ে গিয়ে দেবিদ্বারের পান্নারপুল এলাকায় তারা বেরিকেট দেন। কোন কিছু বুঝার আগেই সাথে সাথে ভুয়া ডিবি সদস্যেরা সবাই পালিয়ে গেলেও গাড়িসহ চালককে আটক করে তারা। পরে সেখান থেকে অপহরণের স্বীকার মো. ইসমাইলকেও উদ্ধার করেন তারা।
ঘটনা বিষয়ে ইসমাইল হোসেন আরও জানান, জোরপূর্বক অটোরিকশা থেকে আমাকে গাড়িতে তুলেই তারা ডিবির লোক পরিচয় দেয়। আমি কিছু বলার আগেই আমাকে মারধর করে ও হাত মুখ বেঁধে ফেলে। পরে কিছু যুবক মোটরসাইকেল নিয়ে বেরিকেট দিলে গাড়িতে থাকা চারজন সকলেই পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে দেবিদ্বার থানা পুলিশের একটি টিম ভুয়া ডিবি সদস্যসহ মাইক্রোবাসটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন।
আটককৃত ব্যক্তির নাম মো. কামাল হোসেন (৪১), তিনি কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার পূর্ব আইলা গ্রামের মৃত: আসন আলীর পুত্র। বর্তমানে সে ঢাকার মিরপুর-১৪ ব্যাটালিয়ান এলাকায় বসবাস করে। ও জব্দকৃত মাইক্রোবাসটি সাদা রংঙ্গের, যার নাম্বার ঢাকা মেট্রো -চ ২০-১৯৫৬।
এ বিষয়ে দেবিদ্বার থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহবুব আলম বলেন, খবর পেয়ে ভুয়া ডিবি সদস্যসহ একটি গাড়ি আটক করেছি। ঘটনার বিষয়ে প্রাথমিক জিজ্ঞেসাবাদের সে জানায়, ঢাকার মিরপুর -১৪ ব্যাটালিয়ান এলাকার বাসিন্দা ও সেখানকার “আমিন রেন্টকার এর স্বত্বাধিকারী ও গাড়ির মালিক খসরু মিয়া ভাড়া নির্ধারণ করে ডিবি সদস্যরা যেখানে যায় নিয়ে যেতে বলেন। গত তিন ধরে তাদের নিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘুরাফেরা করে। গত ১৮ ডিসেম্বর বুধবার বিকেল ৪ টার দেবিদ্বার আসেন তারা। সেখানে দেবিদ্বার রেয়াজ উদ্দিন পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে গাড়ি নিয়ে অবস্থান করেন। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা ও পরিকল্পনা করে রাত ৮:৩০ মিনিটের হান্নান ও ইসমাইল দুই বন্ধুকে অপহরণ চেষ্টা করেন।
তিনি আরও জানান, আটককৃত গাড়ির চালক, পালিয়ে যাওয়া চারজন মধ্যে একজনের নাম সুমন বললেও বাকিদের নাম বলতে পারছে না। ঘটনা আমরা তদন্ত করছি। পালিয়ে যাওয়া ভুয়া ডিবি সদস্যদের সনাক্ত ও আটকের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
এ বিষয় দেবিদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ শামসুদ্দিন মো.ইলিয়াস বলেন, আমাদের তদন্ত চলমান, খুব দ্রুত পালিয়ে যাওয়া ভুয়া ডিবি চক্রের সদস্যদের আটক করা হবে।