ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসির বাংলা প্রথম পত্রের প্রশ্নে সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক উদ্দীপক প্রণয়নের অভিযোগ উঠে এসেছে। এইনিয়ে সারাদেশে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেই প্রশ্নপত্রের ছবি ছড়িয়ে পড়লে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিশিষ্টজনরা।
বিতর্কিত সেই প্রশ্নের প্রণয়ন ও পরিশোধনকারীদের চিহ্নিত করেছে ঢাকা শিক্ষাবোর্ড।
অভিযুক্তরা হলেন- প্রশ্নপত্র প্রণেতা ঝিনাইদহের ডা. সাইফুল ইসলাম ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক প্রশান্ত কুমার পাল, প্রশ্নপত্র পরিশোধনকারী নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের সহযোগী অধ্যাপক সৈয়দ তাজুদ্দিন শাওন, সাতক্ষীরা সহকারী মহিলা কলেজের সহযোগী অধ্যাপক মো. শফিকুর রহমান, নড়াইলের মির্জাপুর ইউনাইটেড কলেজের সহকারী অধ্যাপক শ্যামল কুমার ঘোষ এবং কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা আদর্শ কলেজের সহকারী অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম।
ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান তপন কুমার সরকার জানিয়েছেন, ‘অভিযুক্তরা সবাই যশোর বোর্ডের। তাদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, এই বিষয়ে যশোর বোর্ড শিগগির তাদেরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেবে। ’
গত রবিবার এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর দিনে ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
ঢাকা বোর্ডের বাংলা প্রথম পত্রের সৃজনশীল প্রশ্নপত্রে নাটক সিরাজউদ্দৌলা অংশের ১১ নম্বর প্রশ্নের উদ্দীপকে বলা হয়েছে, ‘নেপাল ও গোপাল দুই ভাই। জমি নিয়ে বিরোধ তাদের দীর্ঘদিনের। অনেক সালিশ-বিচার করেও কেউ তাদের বিরোধ মেটাতে পারেনি। কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। এখন জমির ভাগ বণ্টন নিয়ে মামলা চলছে আদালতে। ছোট ভাই নেপাল বড় ভাইকে শায়েস্তা করতে আব্দুল নামে এক মুসলমানের কাছে ভিটের জমির এক অংশ বিক্রি করে। আব্দুল সেখানে বাড়ি বানিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে। কোরবানির ঈদে সে নেপালের বাড়ির সামনে গরু কোরবানি দেয়। এই ঘটনায় নেপালের মন ভেঙে যায়। কিছুদিন পর কাউকে কিছু না বলে জমি-জায়গা ফেলে সপরিবারে ভারতে চলে যায় সে। ’
শিক্ষাবিদ ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, দেশে ধর্মীয় সম্প্রীতি ও অসাম্প্রদায়িকতা শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য হলেও প্রশ্নপত্রে ভিন্ন চিত্র ফুটে উঠেছে। দেশের বাস্তবিক চিত্রও এমন নয়। ধর্মীয় নানা উৎসবে দল-মত নির্বিশেষে এ দেশের মানুষ অংশগ্রহণ করে। পাবলিক পরীক্ষায় প্রশ্ন কাঠামো কেমন হবে সে ব্যাপারে প্রশ্নকর্তা ও মডারেটরদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এরপরও পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে ধর্মকে সামনাসামনি আনা হয়েছে। এতে করে সমাজে বিদ্বেষ ছড়াতে পারে।