ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন এর কার্যালয়ে শাহবাগ থানা বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার (২১ জুলাই) ঢাবির তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন সেখানে বিএনপির নতুন সদস্য ফরম পূরণ ও নবায়নের কার্যক্রমের ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেন। সেখানে তিনি বলেন, “প্রতিদিন ১২টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ফরম বিতরণ করা হবে। ফরম সংগ্রহের জন্য জাতীয়তাবাদী আদর্শের ভাই ও বোনদের ফরম নবায়ন ও নতুন সদস্য ফরম পূরণ করার জন্য বিনীতভাবে অনুরোধ করছি।”
তার এ পোস্টটি ভাইরাল হওয়ার পর এ নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। সেখানকার কিছু ছবিতে দেখা যায় সেখানে ২১ নং ওয়ার্ড, শাহবাগ থানা বিএনপি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদস্য সংগ্রহের কথা উল্লেখ রয়েছে।
জানা গেছে, রুহুল আমিন ছাড়াও অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহ সভাপতি মনিরুল ইসলাম, ভিসি অফিসের সহকারী রেজিস্ট্রার মো. মনিরুজ্জামান, সহকারী হিসাব পরিচালক মোহাম্মদ মোন্তাজ আলী, সহকারী লাইব্রেরীয়ান উত্তম কুমার সরকার, অ্যাডমিনেস্ট্রিটিভ অফিসার মো. সফিউল্লাহ, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের সিনিয়র অ্যাডমিনেস্ট্রিটিভ অফিসার মো. রফিকুল ইসলামসহ প্রায় অর্ধশতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী অফিস সময়ে সমিতির কার্যালয়ে দলীয় সদস্য ফরম পূরনের প্রচারনা চালান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মো. মনিরুজ্জামান প্রথমে অস্বীকার করেন। পরবর্তীতে সেখানে তার ছবি থাকার কথা বললে জেরার মুখে তিনি স্বীকার করে বলেন, আমি সেখানে গিয়ে ৫ মিনিটের মধ্যে ফরম পূরণ করে চলে আসছি। এর বাইরে কার্যক্রম পরিচালনার সাথে আমার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই।
রুহুল আমিন বলেন, আমাকে বিএনপির কয়েকজন যেতে বলায় আমি সেখানে গিয়েছি। আমি আমার সদস্যপদ নবায়ন করতে গিয়েছিলাম। এটি আয়োজনের সাথে আমার কোন যোগসূত্র নেই।
অফিস চলাকালীন দলীয় কার্যক্রমে যাওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমি সেখানে ১০-১৫ মিনিটের মতো থেকে চলে আসছি। এটি আয়োজনের সাথে আমি যুক্ত নই। ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে প্রচারণার বিষয়ে প্রশ্ন করলে উক্ত ফেসবুক পোস্ট ডিলিট করে দেবেন বলে জানান তিনি।
অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহ সভাপতি মনিরুল ইসলাম বলেন, আমাদের স্থায়ী অফিস না থাকায় আমরা সেখানে একদিন দলীয় কার্যক্রম চালিয়েছি। আমাদের এটা উচিত হয়নি। কিন্তু আমরা নিরূপায় হয়ে এটা করেছি।
বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ গনতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের ঢাবি শাখার সদস্য সচিব মহির আলম বলেন, সরাসরি রাজনৈতিক ও দলীয় কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে তারা সরকারি চাকরিবিধি লঙ্ঘন করেছে। অফিস টাইমে রাজনৈতিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে তারা কান্ডজ্ঞানহীন ও দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় দিয়েছে এবং চাকরিতে বহাল থাকার যোগ্যতা হারিয়েছে। তাদের উচিত চাকরি ছেড়ে দিয়ে রাজনীতিতে যুক্ত হওয়া।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রোভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা বলেন, “আমি বিষয়টি মাত্রই জানলাম। আমি এ ব্যাপারে রেজিস্ট্রারের সাথে কথা বলবো, যে এরকম কোনো বিশেষ অনুমতি দেয়া হয়েছে কিনা এবং তারা এখানে এ ধরনের কার্যক্রম চালাতে পারে কিনা। ভবিষ্যতেও এ বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা হবে।”