ঢাবি প্রতিনিধি: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মো. নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে নিজ ইনস্টিটিউটের এক ছাত্রীকে কক্ষে পরামর্শের জন্য ডেকে যৌন নিপীড়ন ও ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগের পর ফুঁসে উঠেছে শিক্ষার্থীরা।
এ প্রেক্ষিতে বুধবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যান ইনস্টিটিউটের বিক্ষুব্ধ সাধারণ শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের সকল ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দেন এবং তার অফিস কক্ষের দরজায় তালা লাগিয়ে দেন। এর বাইরে তারা, ওই দরজায় পার্মানেন্ট মার্কার দিয়ে “যৌন নিপীড়ক” ও “স্টপ সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট” ইত্যাদি লিখে দেন।
এরপর অভিযুক্ত শিক্ষকের বহিষ্কার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিতের দাবিতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করে ওই বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের একটা দল। এর আগে তারা আধা ঘণ্টার মতো উপাচার্য বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। তারপর মিছিল নিয়ে প্রশাসনিক ভবনের দিকে যান।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, আমাদের ইনস্টিটিউটের নারী শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন থেকে আমাদের শিক্ষক অধ্যাপক নুরুল ইসলামের দ্বারা যৌন হয়রানির শিকার হয়ে আসছে। এর আগে অসংখ্যবার ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছিল এবং পত্রপত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল। গত কয়েকদিন আগেও ইনস্টিটিউটের একজন নারী শিক্ষার্থীকে কক্ষে ডেকে নিয়ে যৌন হেনস্থা করে। সার্বিক ঘটনার ভিত্তিতে সুষ্ঠু তদন্ত করে অতি শীঘ্রই অভিযুক্ত শিক্ষকের বহিষ্কার চাই। এই মুহুর্তে আমাদের দাবি হলো- তদন্ত রিপোর্টের পূর্বে উক্ত শিক্ষকের সকল একাডেমিক কার্যক্রম স্থগিত রাখতে হবে।
স্মারকলিপি প্রদান করার পর এক শিক্ষার্থী বলেন, ইনস্টিটিউটের শিক্ষক অধ্যাপক নুরুল ইসলাম কর্তৃক আমাদের একজন নারী শিক্ষার্থী যৌন হয়রানির প্রতিবাদে আমরা ঐ শিক্ষকের ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দিয়েছি এবং শিক্ষকের রুম তালাবদ্ধ করেছি। এই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে ইন্সটিটিউটের শতাধিক সাধারণ শিক্ষার্থী স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করেছে। পরবর্তীতে যৌন নিপীড়ক শিক্ষক নুরুল ইসলামের বহিষ্কারের দাবিতে আমরা ভিসির বাসভবনের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছি।
তিনি আরও বলেন, মানববন্ধন শেষে আমরা মাননীয় ভিসি স্যার বরাবর আমাদের দাবি-দাওয়া সম্বলিত স্মারকলিপি পেশ করেছি। আমাদের শিক্ষার্থীদের ৬ সদস্যদের প্রতিনিধি দল ভিসি স্যারের সাথে এই বিষয়ে দুইদফা আলোচনা করেছে। ভিসি স্যার ইতঃপূর্বে ভিক্টিমের মুখ থেকে সরাসরি ঘটনার বিস্তারিত শুনেছেন। আমাদের প্রতিনিধি দলও ঐ শিক্ষকের পূর্বের এবং বর্তমানের কৃতকর্ম সম্পর্কে সবিস্তারে বর্ণনা করেছেন এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস পেশ করেছেন।
ওই শিক্ষার্থী আরো বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষক নুরুল ইসলাম সম্পর্কে ভিসি স্যার, প্রো-ভিসি স্যারও নিজেদের পূর্বের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। আগামীকাল সিন্ডিকেট কমিটির মিটিং রয়েছে, সেখানে বিষয়টি উত্থাপন করা হবে এবং নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে দোষী ব্যক্তির সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের ব্যাপারে ভিসি স্যার আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন।