আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সম্প্রতি এক মন্তব্য করেছেন – ‘তলে তলে আপস হয়ে গেছে’– এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোচনা। কিন্তু কেন তিনি এ কথা বলেছেন তা নিয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন নিজেই। তার ভাষ্য, ‘এসব কথার যুক্তি আছে এবং জনগণ খায়।’
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মন্ত্রী এসব বিষয়ে খোলামেলা কথা বলেন।
‘তলে তলে অনেক কিছু হচ্ছে’— আলোচিত এই কথার ব্যাখ্যায় ওবায়দুল কাদের বলেন, এ কথা তিনি ভুল বলেননি। কারণ, এক সপ্তাহ আগেও মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের খবর কেউ জানত না।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমাদের দেশে গুজব এবং অপপ্রচারের জন্য বিষয়টি এমন দাঁড়িয়েছে আমাদের (সরকার) সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক অবনতির দিকে। আমাদের সম্পর্ক খারাপ। এ ধরনের একটি গুজব এবং অপপ্রচার ব্যাপকভাবে সমাজে ছড়িয়েছে। সম্পর্ক খারাপ এ বিষয়টি আমাদের দেশে সার্বিক অবস্থা রাজনীতিতে এ মুহূর্তে কাম্য নয়। আমি কথাটা যা বলেছি সেটি কি আপনারা অনুধাবন করছেন না?’
মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টার সঙ্গে যে বৈঠকের বিষয় এক সপ্তাহ পর্যন্ত কেউ জানে না। তাহলে তলে তলে অনেক কিছু হচ্ছে আমি যে কথা বলেছি, আমি তো ভুল বলিনি।’
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘জো বাইডেনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার কন্যার যে সেলফি তখনো তো কিছু কথা হয়েছে। সেটা তো এখন বলাবলি হচ্ছে। এটা তো আর প্রকাশ্যে হয়নি। এটা কোনো কাগজেও আসেনি, মিডিয়াতেও আসেনি। সুতরাং তলে তলে আপস মানে দুদেশের সম্পর্ক উন্নয়ন, বা আমাদের সম্পর্ক ভালো আছে। আমি সেটা বোঝাতে চেয়েছি।’
দায়িত্বশীল একজন হয়ে বলা ‘তলে তলে’ শব্দটা অনেকে নেতিবাচকভাবে নিচ্ছে এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তলে তলে যে বলি সেটা পাবলিক খায়। সে জন্যই তো বলি খেলা হবে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কথাটা হচ্ছে এই, আমেরিকা বলছে তারা অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য, শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চায়। অন্য কিছু না। এই নির্বাচনে যারা বাধা দেবে, তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আসবে। তাদের বিরুদ্ধে ভিসা নীতি। আমরা তো ইলেকশন চাই, আমরা কেন বাধা দেব? আমরা ফ্রি ফেয়ার ইলেকশন চাই, কাজেই বাধা দেওয়ার প্রসঙ্গ আমাদের বেলায় খাটে না।’
প্রসঙ্গত, গত ৩ অক্টোবর ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত আমিনবাজারের শান্তি সমাবেশে ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, দুই সেলফিতেই বাজিমাত, তলে তলে আপস হয়ে গেছে। শেখ হাসিনা, পুতুল আর জো বাইডেনের সেলফি। এক সেলফি দিল্লিতে আর এক সেলফি নিউইয়র্কে। প্রথমে দিল্লিতে বাজিমাত, তারপর নিউইয়র্কে বাজিমাত। কোথায় স্যাংশন, কোথায় ভিসানীতি? তলে তলে আপস হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ স্যাংশন আর ভিসানীতির তোয়াক্কা করে না।