ভয়াল ২১ আগস্ট আজ। ২০০৪ সালের এই দিনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের (তৎকালীন বিরোধী দল) এক সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। হামলায় গুরুতর আহত হন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নিহত হন বহু আওয়ামী লীগ নেতা। আজ সেই ভয়াল হামলার ১৮তম বার্ষিকী।
দিবসটি উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আবারো এই নৃশংস হামলার জন্য তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার বক্তৃতাগুলো অনুসরণ করবেন। কোটালীপাড়া বোমা পুঁতে রাখার আগে বলেছিল— আওয়ামী লীগ শতবছরেও ক্ষমতায় আসতে পারবে না। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার আগে—শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী তো দূরের কথা, বিরোধী দলের নেতাও কোনো দিন হতে পারবে না। এগুলোর তো রেকর্ড আছে।
এসময় তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, এই বক্তৃতা আগাম দিল কীভাবে, যে বিরোধী দলের নেতা হতে পারব না। তার মানে আমাকে হত্যা করবে—এ পরিকল্পনা তারা নিয়ে ফেলেছে।’
রবিবার সকাল সাড়ে ১০টায় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক স্মরণসভায় এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘যখন আমার আব্বা দেশটাকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন, তখনই তো ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা স্প্লিন্টার নিয়ে বেঁচে আছেন, প্রত্যেকেই কিন্তু কষ্ট ভোগ করছেন। যত বয়স বাড়ছে, ততই তাদের শরীরের যন্ত্রণা বাড়ছে। আমি সবার খোঁজ রাখি। বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্ট থেকে তাদের সাহায্য করি। আমার যতদূর সাধ্য, করে দিয়েছে। আমি কাউকে ফ্ল্যাট কিনে দিয়েছি। কাউকে জমি কিনে দিয়েছি। ঘর করে দিয়েছি। মাসোহারার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। প্রতি মাসে ওষুধ কেনার টাকা দিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু তারা যা হারিয়েছে, সেটি তো ফেরত দিতে পারব না। তাদের শরীরের যন্ত্রণা তো প্রশমন করতে পারব না।’
বিএনপির সঙ্গে সমঝোতায় বিভিন্ন গোষ্ঠী সরকারকে চাপ দিচ্ছে—এমন ইঙ্গিত করে সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখন তাদের সঙ্গে বসতে হবে। তাদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। তাদের খাতির করতে হবে। তাদের ইলেকশনে আনতে হবে। এত আহ্লাদ কেন, আমি তো বুঝি না।
এসময় ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার স্মৃতি স্মরণ করতে গিয়ে কয়েকবার আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আমরা তো জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েছি। (বিএনপি) ইলেকশন করবে কীভাবে? যে দলের নেতাই নেই, সাজাপ্রাপ্ত অথবা পলাতক, তারা ইলেকশন করবে কী, আর কীভাবে ভোট পাবে? ভোট কাকে দেখে দেবে—এটিই তো প্রশ্ন। তার পরও অনেক চক্রান্ত আছে। এখনো যেমন নানা রকমের চক্রান্ত। ইলেকশন সামনে এলেই শুরু হয়। কিন্তু এ দেশের মানুষের ওপর আমার আস্থা আছে। বিশ্বাস আছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হয়েছে। উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। স্বাধীনতার চেতনায় জয় বাংলা ফিরে এসেছে। এগুলো যারা সহ্য করতে পারবে না, তারা বসে থাকবে না। তারা আঘাত করবে। বাংলাদেশকে আবারও জঙ্গিরাষ্ট্রে পরিণত করার চেষ্টা করবে। সে বিষয়ে দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানাব।’