নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনে বিএনপি থেকে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী শিল্পপতি শাহ আলমকে মনোনয়ন না দিলে বিএনপির কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতাদের ঘেরাওয়ের হুমকি দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক লুৎফর রহমান খোকা।
বুধবার (২৩ জুলাই) বিকেলে ফতুল্লার ভুইগড় এলাকায় বিএনপির সদস্য নবায়ন ও সদস্য ফরম বিতরণ উপলক্ষে আয়োজিত এক সভায় তিনি এই বক্তব্য দেন। তার এ বক্তব্যে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। পরে বিষয়টি নিয়ে সারাদিনজুড়ে বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) পর্যন্ত দলের বিভিন্ন পর্যায়ে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা চলে।
বক্তব্যে লুৎফর রহমান খোকা বলেন, “ফতুল্লাকে নিয়ে যদি আবারও ষড়যন্ত্র করা হয়, তাহলে এবার ছাড় দেওয়া হবে না। এখানে আর কোনো জোটের খেলা চলবে না। ধানের শীষ ছাড়া অন্য কিছু মেনে নেব না। শাহ আলমই আমাদের প্রার্থী। তাকে মনোনয়ন না দিলে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গিয়ে আমরা তারেক রহমানকে ঘেরাও করব, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ঘেরাও করব। এমনকি প্রয়োজনে দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকেও ঘেরাও করব। এরপরও যদি শাহ আলমকে মনোনয়ন না দেওয়া হয়, তাহলে আমরা আত্মহুতি দিতে প্রস্তুত।”
এই বক্তব্য দেওয়ার সময় সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম পান্না মোল্লাসহ আরও কয়েকজন সাবেক নেতা।
তবে এমন বক্তব্য সামনে আসার পরপরই নারায়ণগঞ্জ বিএনপির একাংশ থেকে শুরু হয় কড়া সমালোচনা। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের প্রতি প্রকাশ্যে হুমকি দেওয়ায় অনেকেই বক্তব্যটিকে “দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী” বলে উল্লেখ করেন।
দলীয় চাপ ও নেতাকর্মীদের তোপের মুখে পড়েন লুৎফর রহমান খোকা। পরে বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) বিকেলে স্থানীয় একটি অনলাইন পোর্টালে তিনি নিজের বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চান।
তিনি বলেন, “বক্তব্যটি আমি আবেগের বশে দিয়েছি। এতে যদি কারো মনে কষ্ট হয়ে থাকে, আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। আমি দলের একজন কর্মী হিসেবে সবসময় দলীয় সিদ্ধান্তকে শ্রদ্ধা করি এবং করব।”
বিএনপির অভ্যন্তরীণ মনোনয়ন প্রক্রিয়া নিয়ে এমন প্রকাশ্য ক্ষোভ ও হুমকি নজিরবিহীন না হলেও, কেন্দ্রীয় নেতাদের নাম করে এভাবে ঘেরাওয়ের হুমকি বিরল বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। বিষয়টি এখন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কীভাবে নেয়, সেটাই দেখার বিষয়।