ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ঘোষণা করেছে, তারা আরও তিন নারী জিম্মিকে মুক্তি দিতে যাচ্ছে। এর মধ্যে আরবেল ইয়েহুদ নামের এক ইসরায়েলি নারী সৈন্যসহ আরও দুই নারী মুক্তি পাবেন। এই মুক্তির ফলে, আগামী সোমবার (২৭ জানুয়ারি) থেকে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা গাজার উত্তরাংশে ফিরতে পারবেন। এই বিষয়ে কাতার সরকারের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে।
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সোমবার সকাল থেকে ইসরায়েল উত্তর গাজার সড়কগুলো খুলে দেবে, যাতে সেখানে থাকা ফিলিস্তিনিরা তাদের বাড়িঘরে ফিরে যেতে পারেন। এই ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি এক্স (আগের টুইটার) পোস্টে বলেন, “হামাসের কাছ থেকে তিন নারী জিম্মি মুক্তির বিনিময়ে আমরা সোমবার থেকে ফিলিস্তিনিদের ফিরতে দিতে সম্মত হয়েছি।”
নেতানিয়াহু তার অফিসের মাধ্যমে আরও জানান, “আমরা কোনোভাবেই যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘন মেনে নেব না এবং আমাদের জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।” কাতার ও মিশর, যারা হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করছে, তারা এই মুক্তির বিষয়ে নিশ্চিত করেছে যে, যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী প্রথম পর্যায়ে জিম্মিরা মুক্তি পাবে।
এরই মধ্যে, কাতার ও মিশরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতির চুক্তি অনুসারে, প্রায় ৬ লাখ ৫০ হাজার বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি মধ্য ও দক্ষিণ গাজায় ফিরে যাওয়ার সুযোগ পাবেন। গত ১৫ মাস ধরে চলা ইসরায়েলি হামলায় তাদের বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে গেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই দীর্ঘ যুদ্ধে ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৪৭ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
গত ৭ অক্টোবর, হামাস ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে ২৫০ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যায়, যাদের মধ্যে অনেক নারী ও শিশু ছিলেন। হামলায় ১২০০ জন ইসরায়েলি নিহত হন এবং এরপর থেকে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে তুমুল লড়াই শুরু হয়, যা এখনো চলমান রয়েছে।
এই নতুন চুক্তির ফলে, গাজার মানুষ একসময় যেভাবে একে অপরকে হারিয়ে ফেলেছিলেন, সেভাবে তাদের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে, তবে পুরো পরিস্থিতি অনেকটাই জটিল ও স্পর্শকাতর। সূত্র: রয়টার্স