কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্স থেকে এবারও মিলেছে বিপুল পরিমাণ অর্থ। শনিবার সকাল ৭টায় মসজিদের ১১টি দানবাক্স খুলে পাওয়া গেছে ২৮ বস্তা টাকা, বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা এবং কিছু স্বর্ণালংকার। দানবাক্স খোলার সময় চমক সৃষ্টি করেছে কয়েকটি বেনামি চিরকুট, যার মধ্যে একটি চিরকুটে লেখা ছিল, ‘ড. ইউনূস স্যারকে আরও পাঁচ বছর ক্ষমতায় চাই, সাধারণ জনগণ, আল্লাহ তুমি সহজ করে দাও।’
পাগলা মসজিদের দানবাক্স খোলাকে ঘিরে পুরো এলাকা পরিণত হয় এক উৎসবমুখর পরিবেশে। প্রশাসনের কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে দানবাক্সগুলো খোলা হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও দানবাক্স খোলা কমিটির আহ্বায়ক জেসমিন আক্তার, রূপালী ব্যাংকের এজিএম মোহাম্মদ আলী হারিসীসহ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য।
দানের অর্থ গণনার কাজে অংশ নিয়েছেন মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্য, মাদ্রাসা ও এতিমখানার শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ প্রায় ৪ শতাধিক জনবল। গণনা শেষে পুরো টাকার পরিমাণ নির্ধারণ করে তা রূপালী ব্যাংকে জমা দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, প্রতি তিন থেকে চার মাস অন্তর পাগলা মসজিদের দানবাক্স খোলা হয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা এখানকার দানবাক্সে নিয়মিতভাবে অর্থ, স্বর্ণালংকার, এমনকি বৈদেশিক মুদ্রাও দান করে থাকেন। পাগলা মসজিদ দেশের অন্যতম দানবহুল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত। আগের দানবাক্স খোলার সময়ও প্রায় ৫ কোটি টাকার সমপরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করা হয়েছিল।
তবে এবার পাওয়া চিরকুটটি বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে প্রশাসনের। ড. ইউনূস স্যার উল্লেখ করে তাতে তাকে ক্ষমতায় চাওয়ার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করা হয়েছে। এটি নিছক একটি সাধারণ মুসল্লির অনুভব, নাকি এর পেছনে কোনো সাংগঠনিক বা রাজনৈতিক ইঙ্গিত রয়েছে—তা নিয়ে নানা মহলে চলছে আলোচনা।
পাগলা মসজিদের প্রশাসন জানিয়েছে, প্রাপ্ত অর্থ মসজিদের উন্নয়ন, এতিমখানা, মাদ্রাসা ও বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় করা হবে। বিদেশি মুদ্রা ও স্বর্ণালংকার আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ব্যাংকে হস্তান্তর করা হবে।