বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এবার দাবি আদায়ে বিএনপিকে কোনো কিছুই আটকাতে পারবে না।
মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে প্রতিটি স্টেপই ঝুঁকিপূর্ণ। ওই ঝুঁকি নিয়ে চিন্তা করে তো লাভ নেই। মানুষ জেগে উঠেছে, তারা দাবি আদায়ে বদ্ধপরিকর। একটার পর একটা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে এগিয়ে যাচ্ছে। তখন আওয়ামী লীগ শান্তি সমাবেশের নামে অশান্তি সৃষ্টি করা, শান্তি আর উন্নয়নের নাম করে গোটা দেশে অশান্তি সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। এটা তারা সুচারুপে করে যাচ্ছে।
কোনো কিছু আটকে রাখতে পারবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ভয়-ভীতি, সভা-সমিতি যতই কিছু করুক, এবার আমাদের এবং বাংলাদেশের মানুষকে দাবি আদায়ের ক্ষেত্রে কোনো কিছু আটকাতে পারবে না। গ্রেপ্তার, মামলা বলেন আর রাত্রিবেলা মামলা পরিচালনা বলেন; কোনো কিছু আটকাতে পারবে না। সুতরাং এবারের আন্দোলন একটা সিদ্ধান্তের দিকে যাচ্ছে। জনগণের বিজয় হবে।
বিএনপির সমাবেশের অনুমতি প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম, সমাবেশ নিয়ে আমরা কোনো উত্তর পাইনি। আমরা তাদের জানিয়েছি, এখানে তো চাওয়ার কিছু নেই। এখানে অনুমতি চাওয়ার কিছু নেই। পুলিশকে অবগত করতে হয়, করেছি। এখানে তারা কি করবে না করবে, এটা ডিএমপির দায়িত্ব।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমার ১ দফা দাবি আদায়ে একটা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দিয়েছে। অন্যান্য দলগুলোর অধিকার আছে, আওয়ামী লীগের অধিকার আছে তাদের কর্মসূচি পালনের। জামায়াতের অধিকার আছে। গণতন্ত্র মঞ্চসহ প্রায় ৪০টা দল সমাবেশ ডেকেছে। এটা গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অংশ। এটাতো বিএনপি একার বিষয় না, সারাদেশের জনগণের বিষয়। সেজন্য এটাকে আমরা দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ বলছি।
আনসারকে গ্রেপ্তার ও তল্লাশি করার ক্ষমতা দিয়ে সংসদে যে বিল উত্থাপন করা হয়েছে তার তীব্র সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, এটা একটা ভয়াবহ দুশ্চিন্তা নয়, আতঙ্কে বিষয়। তারা গোটা রাষ্ট্রব্যবস্থা ও বিচার ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। এখন সারা পৃথিবীতে পুলিশ একমাত্র গ্রেপ্তারের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। সেখানে এখন আনসারকে গ্রেপ্তার করার ক্ষমতা দেওয়া হবে। যাদের বেসিক ট্রেনিং নেই।
আনসারদের এ ক্ষমতা দেওয়ার আইন পাস থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আনসার বাহিনীকে অনেকটাই আধুনিক করেছিলেন জিয়াউর রহমান। আর সেটিকে রাজনীতিকরণ করার চেষ্টা করেছে আওয়ামী লীগ।
বিএনপি মহাসচিব কথা বলেন, ১৩ অক্টোবর কুমিল্লায় হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সমাবেশে যে হামলা হয়েছে সে বিষয়ে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য বাহারের নির্দেশে হয়েছে। ওই ঘটনায় ছাত্রলীগ যুবলীগ সরাসরি জড়িত।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহতদের প্রতি দলের পক্ষ থেকে শোক প্রকাশ ও ক্ষতিপূরণ দাবি করেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ সারাদেশে একটা ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছে। তারা বলছে নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ হবে। এসব বলে তারা জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে। কিন্তু তাদের কার্যক্রম সম্পূর্ণ বিপরীত। এখন থেকে তারা সারাদেশে একটা ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছে, যাতে নির্বাচনের কোনো পরিবেশ না থাকে।
তিনি বলেন, বিরোধী দল কেন, ভোটার যেন ভোট দিতে না যায়, তার ব্যবস্থা করে ফেলেছে। আর ভোটবাক্স কীভাবে ভরে ফেলবে সেই ব্যবস্থা করে ফেলেছে। অর্থাৎ সামনের আসন্ন নির্বাচন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আবারও তারা ক্ষমতা আসবে সেই পরিকল্পনা করছে। সেইভাবে এগোচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল প্রমুখ।