রবিবার, ১ জুন, ২০২৫

‘দুঃখিত, আপা! এটাই শেষ!’

নিজস্ব প্রতিবেদক
-বিজ্ঞাপণ-spot_img


গত আগস্টের শেষ দিকে, যখন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরকে জুলাই ও আগস্টের নৃশংসতার নিরপেক্ষ তদন্ত পরিচালনার জন্য আমন্ত্রণ জানান, তখন অনেকেই সংশয় প্রকাশ করেছিলেন।

কেউ কেউ মনে করিয়ে দিয়েছিলেন পুরোনো বাংলা প্রবাদ— ‘খাল কেটে কুমির আনার ব্যবস্থা হচ্ছে।’ অনেকে আশঙ্কা করেছিলেন, জাতিসংঘ অপ্রয়োজনীয়ভাবে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে এবং হয়তো এমন একটি আপসকামী প্রতিবেদন দেবে, যেমনটি আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যে দেখা যায়। তবে অধ্যাপক ইউনূস তার সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন।

শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এসব কথা বলেন।

পোস্টে শফিকুল আলম আরও লেখেন, ড. ইউনূস চেয়েছিলেন, হত্যাকাণ্ড ও সহিংসতার বিষয়ে একটি নিরপেক্ষ তদন্ত। তার বিশ্বাস ছিল, জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরই একমাত্র সংস্থা যারা এমন সত্য উদঘাটন করতে পারে। অবশ্য, বাংলাদেশে সবাই জানত জুলাই ও আগস্টে কী ঘটেছে, কারা হত্যার নির্দেশ দিয়েছে, পুলিশের ভূমিকা কী ছিল, নিরাপত্তা বাহিনী এবং আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব ও কর্মীদের কী ভূমিকা ছিল। তবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এবং নিরপেক্ষ সংস্থার তদন্ত প্রতিবেদন থাকাটা জরুরি ছিল। আর সেই সত্য যদি অপ্রিয় হয়, তাতেও আপত্তি নেই!

স্ট্যাটাসে তিনি আরও লেখেন, অবশেষে জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ওপর চূড়ান্ত আঘাত হেনেছে। তার রাজনীতিতে ফেরার সামান্য সম্ভাবনাও এখন শেষ। যদি আওয়ামী লীগ এবং তাদের সেই বিশাল কর্মীবাহিনী, যারা জুলাই-আগস্টের হত্যাযজ্ঞে জড়িত ছিল না, দলকে পুনর্জীবিত করতে চায়, তবে একমাত্র উপায় হলো— শেখ হাসিনা ও তার পরিবারকে প্রত্যাখ্যান করা এবং জাতির কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়া। জাতিসংঘের প্রতিবেদন অন্য কোনো ব্যাখ্যার সুযোগ দেয়নি।

পোস্টে আরও জানানো হয়, কিন্তু শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ এতটা সৌভাগ্যবান নয়! আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো তার মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রায় সব ঘটনাই নথিভুক্ত করেছে। তার ভোট কারচুপির কৌশল ছিল স্পষ্ট ও নির্লজ্জ। গুম, গণহত্যা, গণগ্রেপ্তার— সবই বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় তোলে। তারপরও, সন্ত্রাসবিরোধী অবস্থানের কারণে তিনি পশ্চিমা বিশ্বের সমর্থন পেতেন।

তার একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে যখনই বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদ উঠেছে, পশ্চিমা দেশগুলো তাকে অনিচ্ছাসত্ত্বেও সমর্থন দিয়েছে, কারণ তিনি ‘ওয়ার অন টেরর’ বা সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে ‘সঠিক’ পক্ষে ছিলেন। এমনকি তার পতনের পরও, আওয়ামী লীগের প্রচারযন্ত্র ও ভারতীয় গণমাধ্যম প্রমাণ করতে চেয়েছে যে জুলাইয়ের বিদ্রোহ ছিল মূলত ইসলামপন্থিদের দ্বারা সংগঠিত— যা মূলত ‘ওয়ার অন টেরর’-এর অংশ হিসেবে একটি প্রচার কৌশল।

কিন্তু জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদন তার সকল প্রচেষ্টা ধ্বংস করে দিয়েছে!

সর্বশেষ তিনি লেখেন, দুঃখিত, আপা! এটি শেষ!

শেয়ার করুন

সর্বশেষ নিউজ

স্বান্তনার ম্যাচে বাংলাদেশের রেকর্ড সংগ্রহ

প্রথম দুই ম্যাচে শোচনীয় হারের পর পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচটা নেহাতই আনুষ্ঠানিকতার। কিন্তু না পাওয়ার সেই ম্যাচেই জ্বলে উঠল বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ। আরও...

ফেনীতে মুহুরী নদীর পানি বাড়ছে, আতঙ্কে নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দারা

ফেনী প্রতিনিধি: ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানির প্রবাহে রবিবার সকাল থেকে হঠাৎ করে ফেনীর মুহুরী নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। রবিবার সন্ধ্যা...

কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে ব্যাংক কর্মকর্তাদের অচেতন অবস্থায় উদ্ধার

জেলা প্রতিনিধি কিশোরগঞ্জ: কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরের আইএফআইসি ব্যাংকের সাব ব্রাঞ্চ শাখার সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে আজ রোববার দুপুরে তাদের কর্মস্থলে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয় জনগণ...

৩০০ আসনে প্রার্থী তালিকা চূড়ান্তে মাঠে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস

সাইফুল ইসলাম, স্টাফ রিপোর্টার: আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের ৩০০টি আসনে প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করার কার্যক্রম শুরু করেছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। আগামী...

সম্পর্কিত নিউজ

স্বান্তনার ম্যাচে বাংলাদেশের রেকর্ড সংগ্রহ

প্রথম দুই ম্যাচে শোচনীয় হারের পর পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচটা নেহাতই আনুষ্ঠানিকতার। কিন্তু...

ফেনীতে মুহুরী নদীর পানি বাড়ছে, আতঙ্কে নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দারা

ফেনী প্রতিনিধি: ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানির প্রবাহে রবিবার সকাল থেকে...

কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে ব্যাংক কর্মকর্তাদের অচেতন অবস্থায় উদ্ধার

জেলা প্রতিনিধি কিশোরগঞ্জ: কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরের আইএফআইসি ব্যাংকের সাব ব্রাঞ্চ শাখার সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে আজ রোববার...