জাপানি নারী নাকানো এরিকো বাংলাদেশ থেকে দুই সন্তান নিয়ে জাপানে যাওয়ার চেষ্টার সময় তাকে বিমানবন্দর থেকে ফিরিয়ে দিয়েছে পুলিশ।
শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ২ শিশুসহ তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে তিনি দুই মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছিলেন। দুই মেয়ে তাদের মায়ের হেফাজতেই ছিল। গতকাল রাত সাড়ে ১২টার সিঙ্গাপুর উড়োজাহাজের একটি ফ্লাইটে তারা জাপানে যাওয়ার চেষ্টা করেন। যেহেতু আদালতের নির্দেশনা ছিল না, তাই তাদের দেশের বাইরে যেতে দেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে দুই মেয়ের বাবা ইমরান শরীফ গণমাধ্যমকে জানান, এ ইস্যুতে মামলাটি আদালতে বিচারাধীন। আপিল বিভাগের রায় অমান্য করে পারিবারিক আদালতের চূড়ান্ত রায় হওয়ার আগে দুই মেয়েকে নিয়ে মা জাপানে পালিয়ে যাচ্ছিলেন। আগামী ২৭ ডিসেম্বর আমি আপিল বিভাগে অভিযোগ করব।
২০০৮ সালে জাপানি চিকিৎসক নাকানো এরিকোর সঙ্গে বাংলাদেশি প্রকৌশলী ইমরান শরীফের বিয়ে হয়। বিয়ের ১২ বছর পর দাম্পত্য কলহের জেরে ২০২০ সালের শুরুতে বিচ্ছেদের আবেদন করেন এরিকো। এরপর ইমরান স্কুলপড়ুয়া বড় দুই মেয়েকে নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন। ছোট মেয়ে জাপানে এরিকোর সঙ্গে থেকে যান।
করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে গত বছর জুলাই মাসে মেয়েদের নিজের জিম্মা পেতে বাংলাদেশে আসেন এই জাপানি নারী। তিনি হাইকোর্টে রিট আবেদন করলে তাদের সমঝোতায় আসতে বলেন বিচারক।কিন্তু ওই দম্পতি সমঝোতায় না আসায় কয়েক মাস ধরে শুনানির পর হাইকোর্ট দুই সন্তানকে বাবার হেফাজতে রাখার সিদ্ধান্ত দেন। পাশাপাশি মা যাতে সন্তানদের সঙ্গে দেখা করতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে বাবাকে খরচ দিতে বলা হয়।
শিশুদের মা নাকানো এরিকো হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন। পরে আপিল বিভাগ এক আদেশে শিশু দুটিকে মায়ের জিম্মায় রাখার নির্দেশ দিলেও বাবা তা মানতে অস্বীকৃতি জানায়।
এরপর আদালত শিশু দুটিকে বাবার হেফাজত থেকে এনে তাদের সঙ্গে কথা বলে এবং পরে মায়ের হেফাজতে দেওয়ার আদেশ দেন। সর্বশেষ আপিল বিভাগের রায়েও দুই শিশুকে মায়ের কাছে রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছিলো।